কে বড় শত্রু, পুরনো তর্কই বহাল সিপিএমে

দেখেশুনে পার্টির এক নেতার মন্তব্য, ‘‘শত্রু কে, তা ঠিক করতেই দিন কাবার। যুদ্ধ জয় কবে হবে, কে জানে! আমরা যাদের শত্রু বলব কি না, তা-ই নিয়ে ভেবে মরছি, সেই শত্রুরা জাতীয় স্তরে আমাদের নিয়ে মাথাই ঘামায় না! আমরাই দিনদিন ব্রাত্য হয়ে পড়ছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
Share:

ফাইল চিত্র।

পার্টি কংগ্রেস আসে, পার্টি কংগ্রেস যায়! সিপিএমের সামনে যুগে যুগে একই প্রশ্ন এসে হাজির হয়—কে বড় শত্রু? বিজেপি না কংগ্রেস?

Advertisement

আগামী বছর এপ্রিলে হায়দরাবাদে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস। সীতারাম ইয়েচুরি-প্রকাশ কারাটেরা ফের চুলচেরা বিতর্ক শুরু করে দিলেন, বিজেপি ঠিক কত বড় শত্রু? তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়া জরুরি কি না? না কি কংগ্রেস ব্রাত্য হয়েই থাকবে সিপিএমের কাছে? দিল্লিতে আজ শেষ হওয়া দু’দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠকে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক রণকৌশলের খসড়া নিয়ে ফের সেই তর্কই চলল।

দেখেশুনে পার্টির এক নেতার মন্তব্য, ‘‘শত্রু কে, তা ঠিক করতেই দিন কাবার। যুদ্ধ জয় কবে হবে, কে জানে! আমরা যাদের শত্রু বলব কি না, তা-ই নিয়ে ভেবে মরছি, সেই শত্রুরা জাতীয় স্তরে আমাদের নিয়ে মাথাই ঘামায় না! আমরাই দিনদিন ব্রাত্য হয়ে পড়ছি।’’

Advertisement

তিন বছর আগে বিশাখাপত্তনম পার্টি কংগ্রেসে ইয়েচুরি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে এত দিন কারাটের বেঁধে দেওয়া লাইন মেনেই চলতে হয়েছে। যেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত রকম বোঝাপড়ার রাস্তা বন্ধ। হায়দরাবাদে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ার রাস্তা খুলতে চাইছেন ইয়েচুরি। কিন্তু পিনারাই বিজয়নেরা তাতে সায় দিতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি।

পলিটব্যুরো বৈঠকের শেষে আজ ইয়েচুরি বলেন, ‘‘মার্কসবাদ অনুযায়ী রাজনৈতিক রণকৌশলের সংজ্ঞাই হল, বাস্তব পরিস্থিতির বাস্তবমুখী বিশ্লেষণ। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। তাই পার্টি লাইনও বদলাতে হবে।’’ কিন্তু কারাটেরা কংগ্রেসকে নিয়ে আপত্তি তোলায় ইয়েচুরি শিবিরের কৌশল হল, কংগ্রেসের নাম না করে বিজেপি-কে ‘প্রধান শত্রু’ হিসেবে রাজনৈতিক রণকৌশলে চিহ্নিত করা। তা হলে পরের ধাপে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তাও খোলা যাবে। আবার কারাটদের দাবি, বিজেপি-কে প্রধান শত্রু বলা হলেও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানো যাবে না বলে শর্ত বেঁধে দিতে হবে! পলিটব্যুরোর পরে এ বার অক্টোবরে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে।

পার্টি কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে আপাতত সিপিএম নেতারা ঠিক করেছেন, বিভিন্ন গণসংগঠনের সঙ্গে আন্দোলনে হাত মেলানো হবে। সেপ্টেম্বরে ও নভেম্বরে দিল্লিতে গণসংগঠন, যুব সংগঠন, ও শ্রমিক সংগঠনগুলির কর্মসূচিতে সিপিএম সমর্থন জানাবে বলে ঠিক হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement