প্রতীকী ছবি।
নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে গোটা দেশের বড় বড় সংবাদপত্রে পাতা জোড়া বিজ্ঞাপন দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। বক্তব্য, “আপনাদের (গ্রাহকদের) প্রাইভেসিকে মর্যাদা দেয় ও সুরক্ষিত রাখে হোয়াটসঅ্যাপ।” সঙ্গে গত কালের দেওয়া সাত দফা ব্যাখ্যা বা আশ্বাসগুলিই ফের তুলে ধরা হয়েছে। নিজেদের বাজার বাঁচাতে এটি তাদের তৃতীয় দফার প্রচার অভিযান। যা মূলত স্পষ্ট করে দিয়েছে তিনটি বিষয়:
এক, টেলিগ্রাম বা সিগন্যাল-এর মতো বার্তা অ্যাপ বাস্তবিকই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে মার্ক জ়াকারবার্গের হোয়াটসঅ্যাপকে। বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপের দুই জনক ব্রায়ান অ্যাকটন ও জান কুম-এর মধ্যে প্রথম জন যেখানে বাজি ধরেছেন তাঁদের ‘ওপেন-সোর্স’ প্রযুক্তির ভিত্তিতে গড়ে তোলা অলাভজনক বার্তা-অ্যাপ সিগন্যালের উপরে। যার উপরে ভরসা রাখছেন এলন মাস্ক, এডওয়ার্ড স্নোডেন, পেটিএমের সিইও শেখর শর্মার মতো মানুষেরা।
দুই, সংবাদপত্রের ক্ষমতা। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হয়েও হোয়াটস্যঅ্যাপকে যে ভাবে খবরের কাগজে বিপুল অর্থ ঢেলে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখা বা ফেরানোর চেষ্টা করতে হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট খবরের কাগজের ক্ষমতা কতটা। একে মুছে ফেলা তো দূর বরং সংবাদপত্রের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে ডিজিটাল দুনিয়াকে। নেটিজ়েনরা এ কথা মানছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: বিজেপির ‘অহং’, সংঘাত শরিকদের সঙ্গে
আরও পড়ুন: শনিবার উদ্বোধনে মোদী, রওনা হল কোভ্যাক্সিনও
তিন, দ্বিচারিতা। ইউরোপীয় ইউনিয়নে তথ্য সুরক্ষার আইন কড়া। সেই সব দেশের ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তথ্য পাবে না এর মালিক সংস্থা ফেসবুক। অথচ উপযুক্ত আইনের অনুপস্থিতি বা শিথিলতার কারণে অন্যত্র গ্রাহকদের তথ্য পাবে ফেসবুক।
ব্যক্তিগত পরিসরের তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ফেসবুকের ভূমিকা ও দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্নগুলি রাতারাতি উঠে আসেনি। ফেসবুক ও তাদের অন্যান্য সংস্থাকে হোয়াটসঅ্যাপের তথ্য জোগানোর বিষয়টি সামনে এসেছে তাদের তথ্য-সুরক্ষা ও গোপনীয়তার নয়া শর্ত ও নীতি ঘোষণার পরই। পরিষেবা নিতে হলে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে যা মানতেই হবে গ্রাহকদের। আর এতেই বার্তা-পরিষবার বাজারে নতুন ঢেউ এসেছে। এই মুহূর্তে দিনে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ তাঁদের ডিভাইসে সিগন্যাল অ্যাপ ইনস্টল করছেন। এক সময়ে হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে যেমনটা দেখা যেত। গত রবিবার এক দিনে ৮.১ লক্ষ নতুন গ্রাহক পেয়েছে সিগন্যাল। হোয়াটসঅ্যাপ নীতি বদলের ঘোষণার পরে দৈনিক বৃদ্ধির হিসেবে যা ১৮ গুণ। ব্রায়ান বলছেন, “চাপ সামলাতে সকলে মিলে কাজে ডুবে রয়েছি। ঘুমের সময় কমেছে।” সার্ভারের ক্ষমতা ইতিমধ্যেই বাড়িয়েছে সিগন্যাল। মূলত সংবাদ জগত ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির কর্মীরা এত দিন ব্যবহার করতেন এটি। এখন নজরে আসছে আমজনতারও।