নীতীশ কুমার।—ফাইল চিত্র।
উত্তরাধিকারী নিয়ে কি চিন্তিত নীতীশ কুমার— জেডিইউয়ের বৈঠকে তাঁর মন্তব্যে এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে দলের অন্দরমহলে।
রবিবার দলের বিহার শাখার কর্মসমিতির বৈঠকে অন্য নেতাদের সঙ্গে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে কথা বলছিলেন নীতীশ। বৈঠকে হাজির এক নেতা জানান, ৬৬ বছরের ‘সুপ্রিমো’ আচমকা তাঁর মৃত্যুর পর দলের ভবিষ্যৎ কী হবে সেই প্রসঙ্গ তোলেন।
রাজ্যের ২১৫ জন জেডিইউ নেতা বৈঠকে হাজির ছিলেন। নীতীশের মন্তব্যে তাঁরা হতবাক হয়ে যান। দলের প্রথম সারির এক নেতা বলেন, ‘‘উত্তরাধিকারী নিয়ে উনি চিন্তিত। তাঁর মৃত্যুর পরে দল কোনও আদর্শচ্যূত নেতার হাতে না যায়, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
জেডিইউ সূত্রে খবর, কয়েক দিন ধরেই শরীর ভাল নেই নীতীশের। মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাজের চাপ আগের মতো নিতে পারেন না। তবু দিনে ১২ ঘন্টা কাজ করেন। মানসিক ভাবেও খুব শান্তিতে তিনি নেই। দীর্ঘদিনের বন্ধু শরদ যাদবের সঙ্গে দূরত্ব মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। মহাজোট ভাঙার পরে লালুপ্রসাদ ও তাঁর পরিবারের আক্রমণেও কষ্ট পেয়েছেন। রাজনৈতিক শিবিরের কানাঘুষো, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও নীতীশকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাতে কিছুটা হলেও হতাশ নীতীশ।
লালুর ছেলে তেজপ্রতাপ, তেজস্বী নেমেছেন রাজনীতির ময়দানে। আরজেডি-র হাল ধরেছেন তাঁরা। কিন্তু নীতীশের ছেলে নিশান্ত কুমার রাজনীতিতে আসতে চান না। নিশান্ত জানিয়েছেন, সমাজসেবার কাজে তিনি ব্যস্ত। রাজনীতিতে তাঁর মন নেই। এর জেরে নিজের ‘ব্যাটন’ কার হাতে তুলে দেবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন নীতীশ।
রবিবারের বৈঠকে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠনারায়ণ সিংহ। তিনি আজ বলেন, ‘‘নীতীশ কুমার কম করে আরও ১০ বছর নিশ্চিন্তে কাজ করে যাবেন। তিনি আসলে বলতে চেয়েছেন, দলের নেতা-কর্মীরা যেন নিজেদের কাজ দায়িত্ব নিয়ে সৎ ভাবে পালন করেন।’’
এর মধ্যেই আজ সন্ধেয় বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অশোক চৌধুরিকে সরিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, অশোকের গোষ্ঠীর সঙ্গে দলের অন্য একটি অংশের গোলমালের জেরে বিহার কংগ্রেসে চিড় ধরার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তার পরেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।