ডাল লেকে কড়া প্রহরা। ছবি: রয়টার্স।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আবারও জঙ্গিহানার আশঙ্কা রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে! সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি উপত্যকার ৪৮টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঝুঁকি এড়াতে কাশ্মীরের মোট ৮৭টি পর্যটনস্থলের মধ্যে ৪৮টি-ই সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রও।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকছে জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৮টি জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিনথান টপ, ইউসমার্গ, বাঙ্গাস ভ্যালি, শ্রুঞ্জ জলপ্রপাত, গোগালদারা, কামানপোস্ট এবং অষ্টান্মার্গ। এ ছাড়াও বন্ধ রয়েছে তৌসিমায়দান, দুধপাথরি, আহরবাল, কাউসারনাগ, চান্দিগাম, উলার, রামপোরা প্রভৃতি এলাকা। তালিকায় রয়েছে রাজপোরা, চিয়ারহার, মুন্দিজ-হামাম-মারকুট জলপ্রপাত, খাম্পু, বসনিয়া, সূর্য মন্দির, ভেরিনাগ গার্ডেন, আকদ পার্ক, হাব্বা খাতুন পয়েন্ট, বাবরেশি, রিঙ্গাওয়ালি, বাদেরকোট, নাম্বলান জলপ্রপাত, ইকো পার্ক খাদনিয়ার, সাঙ্গারওয়ানি, জামিয়া মসজিদ, বাদামওয়ারি, রাজোরি কাদাল হোটেল, আইভরি হোটেল, পাড়শাপাল রিসর্ট, চেরি ট্রি রিসর্ট, নর্থ ক্লিফ ক্যাফে, ফরেস্ট হিল কটেজ, ইকো ভিলেজ রিসর্ট (দারা), অষ্টান্মার্গ প্যারাগ্লাইডিং পয়েন্ট, মামনেথ এবং মহাদেব পাহাড়, বৌদ্ধ মঠ, দাচিগাম এবং নারানাগ। এগুলির মধ্যে কোনও কোনও স্থানে পুরোদমে শুরু হয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। সরকারি এক কর্তা জানিয়েছেন, গুলমার্গ, সোনমার্গ, ডাল লেক-সহ অন্য যে সব পর্যটনকেন্দ্র খোলা রয়েছে, সেগুলিতেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পহেলগাঁও হামলার পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর, ডোডা এবং কিশ্তোয়ারের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, গত ছ’দিনে উপত্যকার ৬০০ টিরও বেশি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল অনন্তনাগের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক। সেই জঙ্গিহানার পরেই কাশ্মীর জুড়ে পুরোদমে শুরু হয় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। উড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গির ঘরবাড়ি। তবে এখনও পর্যন্ত পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীদের নাগাল পাওয়া যায়নি। কমেনি জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও। বরং গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ‘প্রত্যাঘাত’ হিসাবে শীঘ্রই দ্বিতীয় হামলা করতে পারে জঙ্গিরা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জানাচ্ছে, গত কয়েক দিনে জম্মু ও কাশ্মীরের নানা প্রান্তে জঙ্গিদের একাধিক ‘স্লিপার সেল’ সক্রিয় হয়েছে। শীঘ্রই আবারও কোনও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে তারা। সেই আবহেই বাড়তি সতর্কতা প্রশাসনের।