প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনার পরের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স।
মঙ্গলবার রাত দেড়টা থেকে ২টোর মধ্যে ত্রিবেণী সঙ্গমের কাছে ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষ মারা গিয়েছেন। অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু মহাকুম্ভমেলায় কি বুধবার ভোরে আরও একটি পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল? সেই দ্বিতীয় বিপর্যয় কি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে? প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে তেমনই ইঙ্গিত মিলছে। ইন্ডিয়া টুডে-র সহকারী সংস্থা দ্য লাল্লানটপ জানিয়েছে, ত্রিবেণী সঙ্গমের কাছে ঝুসিতে বুধবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিট নাগাদ আরও একটি পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। অনেকে ধাক্কাধাক্কিতে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। অনেকেই তাঁদের মাড়িয়ে চলে যান। রাত ২টো নাগাদ যেখানে মূল বিপর্যয় ঘটেছিল, সেখান থেকে এই ঘটনাস্থলের দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার।
লাল্লানটপের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, ঝুসিতে ধাক্কাধাক্কির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেখান থেকেও বেশ কয়েক জনের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই দ্বিতীয় ঘটনাটির কথা প্রচার করা হয়নি। সেখানে হতাহতের সংখ্যা নিয়েও সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। সরকারি খাতায় দ্বিতীয় ঘটনাটির উল্লেখই নেই বলে দাবি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে জামাকাপড়, জলের বোতল ও জুতো স্তূপ হয়ে রয়েছে। পরে ট্র্যাক্টরের মাধ্যমে সেগুলি সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শী নেহা ওঝা বলেন, ‘‘ওখানে অনেক দেহ পড়েছিল। সেগুলি নিয়ে কেউ কথা বলছে না। দম আটকে যাঁরা মারা গিয়েছেন, দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁদের দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার চার ঘণ্টা পরে এক মহিলা কনস্টেবল এসেছিলেন। এই জায়গার ভিডিয়ো তুলতে দেওয়া হচ্ছিল না।’’
আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘এখানে লোকজনের পায়ের চাপে অনেক শিশুরও মৃত্যু হয়েছে। কেউ সাহায্যের জন্য এ দিকে ছিল না। অন্তত ২৪টি দেহ এখান থেকে সরানো হয়েছে।’’ মেন বাহাদুর সিংহ নামে আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘এই জায়গাটা এমন, এখানে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স আনার সুযোগ ছিল না।’’
মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে কুম্ভমেলায় ‘শাহি স্নান’-এর জন্য মঙ্গলবার রাত থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করে। রাত ২টো নাগাদ ব্যারিকেড ভেঙে যায় ভিড়ের চাপে। ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে পড়ে যান। সেই সময়ে বাকিরা তাঁদের মাড়িয়ে এগিয়ে যান। এই ঘটনার পর ‘শাহি স্নান’ দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। যোগী আদিত্যনাথকে একাধিক বার ফোনও করেন তিনি। পরে বেলার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।