যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল এই বিমানে?
খোঁজ না পাওয়া বায়ুসেনার বিমানে কি কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল? একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ওই বিমানটিতে এ মাসের গোড়াতেই তিন-তিন বার যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছিল। তার পরেও বিমানটিকে কেন উড়তে অনুমতি দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বায়ুসেনার আধিকারিকরা জানান, বিমানে ছোটখাটো যান্ত্রিক সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁরা আরও জানান, সব রকম পরীক্ষা করেই তবেই বিমান ওড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
এ দিকে প্রায় ২৭ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও খোঁজ মিলল না বায়ুসেনার বিমান এএন-৩২-র। বঙ্গোপসাগরের আকাশ থেকে শুক্রবার সকালে নিখোঁজ হয়ে যায় বিমানটি। তল্লাশি অভিযানে নামানো হয় একটি ডর্নিয়ার-সহ পাঁচটি নজরদারি বিমান এবং নৌসেনার ১৩টি উদ্ধারকারী জাহাজ।
সুলুর এয়ারবেসের ৩৩ নম্বর স্কোয়াড্রনে এই ধরনের মোট ৫০টি বিমান রয়েছে। এএন-৩২ তাদের মধ্যে একটি। প্রতিকূল আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম এই বিমান কী ভাবে নিখোঁজ হয় গেল তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। সেনাদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং দুর্গম অঞ্চলে সেনাদের প্রয়েজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার জন্য এএন-৩২ বিমানের ব্যবহার করা হয়।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় চেন্নাইয়ের তাম্বারম এয়ারবেস থেকে ২৯ জনকে নিয়ে পোর্ট ব্লেয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল এএন-৩২ বিমানটি। পৌনে ১২টা নাগাদ পোর্ট ব্লেয়ারে নামার কথা ছিল। কিন্তু চেন্নাই থেকে ২৮০ কিমি পূর্বে বিমানটির সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চালক ফ্লাইট লেফ্টেন্যান্ট ভদসারা, সহকারী চালক নন্দাল এবং নেভিগেটর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কুণালের উড়ান-টিমের সঙ্গে প্রথম থেকেই যোগাযোগ ছিল চেন্নাই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর। সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে শেষ বার এটিসি-র সঙ্গে কথা হয় চালকের। সকাল ৯টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত চেন্নাই এটিসি-র রেডারে বিমানটিকে দেখা গিয়েছে। এটিসির নথি অনুযায়ী, সে সময় বিমানটি বঙ্গোপসাগরের উপর চেন্নাইয়ের পূর্ব দিকে ০৯৯ ডিগ্রি/১৫১ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ২৮০ কিলোমিটার) দূরত্বে ছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তার উচ্চতা ছিল ২৩ হাজার ফুট। আচমকা বাঁ দিকে মুখ ঘুরিয়ে বিমানটি অতি দ্রুত নীচে নামতে থাকে। এর পরেই আচমকা তার সঙ্গে এটিসি-র সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে পাইলটের তরফ থেকে কোনও বিপদ সঙ্কেত (মে-ডে কল) মেলেনি।
আরও পড়ুন:
সাগরে বেপাত্তা বায়ুসেনার বিমান, ২৯ আরোহীর খোঁজে তল্লাশি