রাঁচীর সভায় রাহুল। ছবি: পিটিআই।
দেশ জুড়ে চর্চার কেন্দ্রে এখন ভারতীয় বায়ুসেনা এবং তাদের উইং কমান্ডার অভিনন্দন। বায়ুসেনাকে সামনে রেখেই আজ কথার যুদ্ধ চলল নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গাঁধীর।
রাঁচীর সভায় রাহুল বললেন, ‘‘যারা আমাদের দেশকে রক্ষা করছে, সেই বায়ুসেনার ৩০ হাজার কোটি টাকা লুট করে অনিল অম্বানীর পকেট ভর্তি করেছেন মোদী।’’ রাতে পাল্টা দিলেন মোদী। টুইটারে লিখলেন, ‘‘রাফালের অভাব আজ অনুভব করছে দেশ। এক স্বরে সারা ভারত বলছে, আজ রাফাল থাকলে কী হত?’’ প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, রাফাল নিয়ে প্রথমে ‘স্বার্থনীতি’ আর এখন রাজনীতির ফলে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। ব্যাখ্যা না-করলেও স্পষ্ট, পাকিস্তানের এফ-১৬-এর মোকাবিলায় ভারতের পুরনো মিগ-২১ ব্যবহারের দায় বিরোধীদের উপরেই চাপিয়েছেন তিনি।
মোদীর এই মন্তব্য তুলে ধরে এর পরে রাহুলও টুইটারে লিখলেন, ‘‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কি মোটেই লজ্জা নেই? আপনি ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি করে বন্ধু অনিলকে দিয়েছেন। রাফাল আসতে দেরির জন্য একা আপনি দায়ী। আপনার জন্যই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মেয়াদ-ফুরনো জেটে উড়তে হয় অভিনন্দনের মতো বীর পাইলটদের।’’
আরও পড়ুন: অভিনন্দন! বিজেপির লোকসভা নির্বাচনী অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ হল নতুন শব্দ
এর আগে রাঁচীর মোরাবাদী ময়দানে আজ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, এক জন চৌকিদার অন্য সব চৌকিদারের বদনাম করছেন। রাহুলের কথায়, ‘‘চৌকিদারেরা আমায় বলেন, ‘আমরা তো সৎ।’ ঠিক। আমি তাঁদের বলেছি, এই চৌকিদার হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপনারা এ নিয়ে চিন্তা করবেন না।’’ এর পর নিজের স্লোগান ব্যাখ্যা করে রাহুল বলেন, ‘‘প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন— অনিল অম্বানীকে ‘অফসেট কন্ট্রাক্ট’ দিলে তবেই রাফাল চুক্তি হবে বলে তাঁকে জানিয়েছিলেন মোদী।’’
দলীয় সভায় পদবি নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে এক প্রস্ত খোঁচা দেন রাহুল। মঞ্চ থেকে প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘বলুন তো, লুট করে দেশ থেকে পালানো সকলের পদবি ‘মোদী’ কেন? নীরব মোদী, ললিত মোদী অথবা...’’ বাক্য শেষ না-করেই রাহুল বলে ওঠেন, ‘‘চৌকিদার...?’’ জনতা উত্তর দেয়, ‘‘চোর হ্যায়!’’
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা ও আরজেডি নেতারাও ছিলেন আজকের সভায়। সেখানেই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনজাতিদের উদ্দেশে রাহুল বলেন, ‘‘জল, জঙ্গল, জমিন আপনাদের। এর উপরে অম্বানী বা আদানিদের কোনও অধিকার নেই।’’ ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস সরকারের তরফে অব্যবহৃত জমি ফেরানো, ছত্তীসগঢ়-মধ্যপ্রদেশে কৃষি-ঋণ মকুবের কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে গরিবদের ন্যূনতম রোজগার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেন। আর বলেন, ‘‘আমি ২০০৪ সাল থেকে লোকসভার সদস্য। কিন্তু যা করা যাবে না, তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আমি দিই না।’’