অরবিন্দ কেজরীবাল শুক্রবার পিটিআইয়ের ছবি।
কেন্দ্রকে আক্রমণের পথ থেকে আদপেই সরছেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
গতকাল শান্ত ছিল দু’শিবিরই। কিন্তু আজ সকাল থেকেই উভয়পক্ষ ফের সম্মুখসমরে নেমে পড়ে। প্রথম আক্রমণ আসে কেন্দ্রের দিক থেকে। সকাল-সকালই উপ-রাজ্যপালের ক্ষমতা সম্পর্কিত একটি নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র। বার্তা স্পষ্ট— কেজরীবালকে বুঝিয়ে দেওয়া যে, উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গের হাতে ঠিক কী ধরনের ক্ষমতা রয়েছে। তার পর সাংবাদিক সম্মেলনে দিল্লি সরকারের লক্ষণরেখা বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করেন অথর্মন্ত্রী অরুণ জেটলিও।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও চুপচাপ বসে থাকেননি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে নেমে কেজরীবাল আজ জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর সীমা জানেন। চলতি বিতর্ক নিয়ে তিনি সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন বলে জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘নজীব জঙ্গ যেন ভাইসরয়! আর প্রধানমন্ত্রীর দফতর হল ইংল্যান্ডের রানি! ভাইসরয়ের মাধ্যমে এখন রানি দিল্লিকে শাসন করতে চাইছেন।’’
অধিকারের প্রশ্নে কেজরীবাল শুরু থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের দাবি তুলে সরব হয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই যুক্তি মানতে নারাজ। আজ মন্ত্রক যে নির্দেশিকা জারি করেছে তার সারমর্ম হল— জমি, আইন-শৃঙ্খলা ও কর্মিবর্গ দফতরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে উপ-রাজ্যপালের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বলেন, ‘‘দিল্লি একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এখানে কেন্দ্রের শাসন চলা উচিত। কিন্তু দেশের রাজধানী হওয়ায় দিল্লির সংবিধানে নির্বাচিত সরকারের হাতেও কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’’
রাজ্য-কেন্দ্রের মধ্যে চলতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে অস্থায়ী মুখ্যসচিব নিয়োগকে ঘিরে। জঙ্গ শিবিরের বক্তব্য, ৪০ ঘণ্টা অপেক্ষা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কাকে অস্থায়ী মুখ্যসচিব করবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত উপ-রাজ্যপাল বাধ্য হয়ে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। কিন্তু কেজরীবাল শিবিরের পাল্টা দাবি, জঙ্গের ওই নিয়োগ করার কোনও এক্তিয়ার নেই।
মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, দিল্লিতে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও অধিকার দিল্লি সরকারের দুর্নীতিদমন শাখার নেই। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে আজ দুর্নীতি দমনের প্রশ্নে মোদী সরকারের প্রকৃত মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেজরীবাল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই নির্দেশিকা দেখিয়ে আসলে দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের বাঁচাতে চাইছে কেন্দ্র। তাই এত তৎপরতা!’’