Visa Policy

ভিসানীতি: তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বেশি আশা নয়

আউটসোর্সিংয়ের দরজা হাট করে খুলে দেওয়ার রাজনৈতিক ঝুঁকি বাইডেনের পক্ষে চট করে নেওয়া শক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৯
Share:

প্রতীকী চিত্র।

অন্তত পাঁচ লক্ষ আমেরিকাবাসী ভারতীয়ের সে দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার হাতছানি আছে। প্রতিশ্রুতি রয়েছে এইচ-১বি ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধির। কিন্তু তা-ই বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবর্তে জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে পা রাখলেই ভিসা সংক্রান্ত নিয়মকানুন রাতারাতি আমূল বদলে যাবে, এমন আশা করছে না এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। তবে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির আশা, হঠাৎ এইচ-১বি ভিসায় রাশ টেনে দেওয়ার মতো ট্রাম্পসুলভ ‘তুঘলকি ফরমান’ বাইডেনেরআমলে থাকবে না। ট্রাম্প-জমানায় ভিসার জন্য যত কারণ দেখাতে হত, দাখিল করতে হত যত নথি,সেই কড়াকড়ি কমার আশাতেও বুক বাঁধছে তারা।

Advertisement


ভারতে প্রথম তিনে থাকা এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার দাবি, সর্বক্ষণ ‘গেল গেল’ রবে বরাত পাওয়া এবং তার কাজ সময়ে শেষ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বছরের শুরুতে বাণিজ্যিক কৌশল সাজানো হত, অনেক সময়েই তা ঘেঁটে যেত ভিসা নিয়ে টানাপড়েনের জেরে।” এইচ-১বি, এল-১ ইত্যাদি ভিসা নিয়ে আমেরিকা এ বার নির্দিষ্ট পথে হাঁটলে, সেই দিশাহারা ভাব কাটার সম্ভাবনা। শুধু এ দেশের ছোট-বড় তথ্যপ্রযু্ক্তি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে নয়, সিলিকন ভ্যালিতে পা রাখার স্বপ্ন নিয়ে যে সব মেধাবী ভারতীয় পড়ুয়া ঋণ নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা পাড়ি দেন, তাঁদেরও কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচার সম্ভাবনা।

বিশেষত যেখানে অঙ্ক, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি নিয়ে পিএইচডি-সহ উচ্চশিক্ষার দরজা ভিন্ দেশি পড়ুয়াদের জন্য আরও বেশি করে খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। কিন্তু যে ভিসায় ভর করে অধিকাংশ ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদার আমেরিকায় পা রাখেন, সেই এইচ-১বি নিয়ে আশার কথা শোনার পরেও (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে) এত সংশয় কেন?

Advertisement

আশার আলো

• এইচ-১বি, এল-১ সমেত বিভিন্ন ভিসায় আমেরিকার মাটিতে নতুন কাজ পাওয়া ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনা।


• বাড়তে পারে বার্ষিক এইচ-১বি ভিসার সংখ্যা। তুলে দেওয়া হতে পারে তা পাওয়ার দেশভিত্তিক কোটাও। সত্যিই হলে,সব থেকে লাভবানভারতের তথ্যপ্রযুক্তি
শিল্পই।


• নাগরিকত্ব পেতে পারেন ১.১ কোটি অভিবাসী। যাঁদের মধ্যে ৫ লক্ষেরও বেশি ভারতীয়। অনেকেই তথ্যপ্রযুক্তিকর্মী।


কিন্তু সংশয়


• ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও, রাতারাতি বদলের সম্ভাবনা কম ভিসা কিংবা অভিবাসন নীতিতে।


• কোভিডের কামড়ে আমেরিকায় বেকারত্বের হার চড়া। ধুঁকছে অর্থনীতি। তাই ঢালাও আউটসোর্সিংয়ের দরজা খোলার রাজনৈতিক ঝুঁকি নেওয়া কঠিন জো বাইডেনের পক্ষে।


• এইচ-১বি সমেত বিভিন্ন ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধির আগে বাড়ানো হতে পারে তার দৌলতে পাওয়া কাজের ন্যূনতম বেতন এবং যোগ্যতার মাপকাঠি। যাতে দক্ষ কর্মীতে টান না-পড়ার পাশাপাশি সাধারণ কাজে অগ্রাধিকার পান ভূমিপুত্রেরাই।


• চিনের প্রতি হয়তো ট্রাম্পের মতো অতখানি খড়্গহস্ত হবেন না বাইডেন। ফলে থমকে যেতে পারে ওই দেশ থেকে অ্যাপল-সহ আমেরিকার বিভিন্ন সংস্থার লগ্নি সরে আসা।

আরও পডুন: রিমসের বাংলোয় টেনশনে অসুস্থ লালু​

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মতে, ‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই’। চড়া বেকারত্বের আমেরিকায় আউটসোর্সিংয়ের দরজা হাট করে খুলে দেওয়ার রাজনৈতিক ঝুঁকি বাইডেনের পক্ষে চট করে নেওয়া শক্ত। দেখা যাবে, হয়তো ভিসার সংখ্যা বাড়ল। কিন্তু তেমনই বাড়িয়ে দেওয়া হল ন্যূনতম বেতনের অঙ্ক। অথবা তা তুলে রাখা হল অনেক বেশি জটিল এবং দক্ষতা দাবি করা কাজের জন্য। ফলে, নতুন নিয়ম আদৌ হচ্ছে কি না কিংবা হলেই বা তার রূপরেখা কেমন, আগে তানা-দেখে আশায় উদ্বেল হতে নারাজ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement