নির্ভয়া তহবিলে কেনা গাড়ি। ছবি সংগৃহীত।
নারীদের উপর ক্রমাগত বেড়ে চলা অত্যাচার রোখার জন্য ২০১৩ সালে ‘নির্ভয়া তহবিল’ তৈরি করেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। স্থির হয়েছিল, এই তহবিলের টাকায় বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ টহলদার গাড়ি কিনবে। রাতে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই গাড়িগুলি করেই টহল দেবেন স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিকরা। গত জুলাই মাসে তহবিলের ৩০ কোটি টাকা দিয়ে ২২০টি বোলেরো, ৩৫টি আর্টিগা, ৩১৩টি পালসার মোটর সাইকেল এবং ২০০টি স্কুটার কিনেছিল মুম্বই পুলিশ। কিন্তু এই গাড়িগুলির অধিকাংশই এখন মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের বিধায়কদের কনভয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ! ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে এই খবর জানা গিয়েছে।
কিছু মাস আগেই শিবসেনা ভেঙে একনাথ শিন্ডে নিজের দল তৈরি করেছেন। বিক্ষুব্ধ শিবসেনা নেতার সঙ্গে রয়েছেন ৪০ জন বিধায়ক এবং ১২ জন সাংসদ। পরে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মহারাষ্ট্রের শাসনক্ষমতায় আসে শিন্ডে-সেনা। তারপরই দলের জনপ্রতিনিধিদের ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অভিযোগ, ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাওয়া জনপ্রতিনিধিদের কনভয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে তহবিলের টাকায় গাড়িগুলিকে। গত জুলাই মাসে প্রথম পুলিশের কাছে ৪৭টি গাড়ি চেয়ে পাঠায় সরকার। ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে গাড়িগুলিকে ফেরত দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় ৫ মাস কেটে গেলও গাড়িগুলিকে সংশ্লিষ্ট থানাকে ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, পুলিশের মোটর বিভাগের অধিকাংশ গাড়ি খারাপ। তাই নির্ভয়া তহবিলের টাকায় কেনা গাড়িগুলিই ছিল ভরসা। তাঁর কথায়, “গাড়ি নেই, চালকরাও নেই। আমরা কি পায়ে হেঁটে টহল দেব?”
ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তাপ্রাপ্তরা একটি অতিরিক্ত গাড়ি পান, যে গাড়িতে ৫ জন পুলিশ আধিকারিক সেই ভিআইপির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন। মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেনা গাড়ি কেন মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এ নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার কিংবা শাসক জোটের অন্যতম শরিক শিন্ডে-সেনার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।