অটলবিহারী বাজপেয়ী। —ফাইল চিত্র।
সার্ক দেশগুলি তো বটেই। অটলবিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুর খবরে বিভিন্ন পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলি একযোগে শোক এবং শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। আজ একই সঙ্গে আমেরিকা ও রাশিয়ার নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রধান রূপকার হিসেবে সম্মান জানিয়েছেন তাঁকে! কূটনীতিকদের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিস্ময়কর ভূমিকা আজ আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গেল।
অথচ গত প্রায় ন’বছর আন্তর্জাতিক কেন, দেশের রাজনীতিতেও অনুপস্থিত বাজপেয়ী। তাঁর শাসনকালে ছিল না সোশ্যাল মিডিয়ার দাপট। তিনি বিদেশমন্ত্রী থাকার সময় সংবাদমাধ্যমও ছিল হাতে গোনা। কিন্তু তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক স্তরে তিনি যে সমীহ এবং শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছিলেন, আবার তার প্রমাণ মিলল তাঁর মৃত্যুতে।
আমেরিকার দূতাবাস থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে জোরদার করতে বাজপেয়ীর অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি ক্ষমতায় এসে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। আজ দু’দেশের মধ্যে যে এত কিছু হচ্ছে তার প্রধান কৃতিত্ব বাজপেয়ীর।’’ পাশাপাশি, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলাই কুদাশেভের কথায়, ‘‘আমরা ওঁকে জানি এক জন কবি, জ্ঞানী মানুষ এবং আমাদের দেশের এক পরম মিত্র হিসেবে। আমাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখার অন্যতম কারিগরও তিনি।’’
আজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থলে হাজির ছিলেন ভুটানের রাজা জিগমে নাংগিল, নেপালের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপকুমার গেয়ালি, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মামুদ আলি, শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী লক্ষণ কিরিয়েলার মতো নেতারা। একটু বিলম্বে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের কার্যনির্বাহী সরকারের আইনমন্ত্রী আলি জাফর। এসেছেন ব্রিটেনের হাইকমিশনার-সহ নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বিভিন্ন রাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্তারা। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কথায়, ‘‘ভারতের অন্যতম সেরা নেতা হিসেবে তাঁকে আমরা মনে রাখব। ব্রিটেনবাসী তাঁকে প্রকৃত রাষ্ট্রনেতা হিসেবে সম্মান করে।’’
মরিশাস তাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখেছিল আজ। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী পি কে জগনাথ শোকবার্তায় লিখেছেন, বাজপেয়ীর মৃত্যু তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষতি। প্রগতি ও উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে ভারত আজ উজ্জ্বল। এটা বাজপেয়ীর দক্ষ ও দৃঢ় নেতৃত্বের ফসল। কাল থেকে পোর্ট লুইয়ে বসবে বিশ্ব হিন্দি সম্মেলন। যাচ্ছেন সুষমা স্বরাজ। বাজপেয়ীকে সেখানে স্মরণ করা হবে, জানিয়েছেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী।