(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পহেলগাঁও কাণ্ডে পাকিস্তানের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিকে সমর্থন করেছে চিন। একই দিনে আমেরিকাও সন্ত্রাসবিরোধিতার বার্তা দিল। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েনের দিকে ওয়াশিংটন নজর রেখেছে। উভয় পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। এর পরেই তিনি জানান, আমেরিকা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে আছে।
ভারত এবং পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে রয়টার্সের প্রশ্নে ইমেলের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে মার্কিন বিদেশ দফতর। মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘এটা একটা ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি। কী কী ঘটছে, আমরা নজর রেখেছি। দায়িত্বশীল সমাধান খুঁজে নেওয়ার জন্য আমেরিকা উভয়পক্ষকে উৎসাহিত করছে।’’ পহেলগাঁও হামলার নিন্দা করেছেন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র। সেই সূত্রেই তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা ভারতের পাশে আছে।’’ একই কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সও।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও নিয়ে চিনের অবস্থানও অনেকটা একইরকম। সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করেছে বেজিং। পাকিস্তান প্রথম থেকেই এই হামলার সঙ্গে নিজেদের যোগ অস্বীকার করে এসেছে। তারা চিন, রাশিয়া এবং পশ্চিমের দেশগুলির কাছে পহেলগাঁও কাণ্ডের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। চিন সেই দাবিকে সমর্থন করেছে। রবিবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সেখানেই তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিকে সমর্থনের কথা জানান। দুই দেশকে সংযত হওয়ার বার্তা দেন। চিন জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদবিরোধী অবস্থানের পাশে আছে তারা।
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পর থেকে চিন-আমেরিকার সম্পর্কে ধারাবাহিক অবনতি ঘটেছে। ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের আধিপত্য লঘু করতে আমেরিকার অন্যতম ভরসা ভারত। তবে পহেলগাঁও কাণ্ড এবং সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতায় বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশের অবস্থানই এক।
পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হানায় ২৫ জন পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করা হয়েছে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। পাকিস্তানের বক্তব্য, এই ঘটনার সঙ্গে তারা আদৌ জড়িত নয়। বরং ভারত সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এবং রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে পাকিস্তানকে দায়ী করছে। পাল্টা হিসাবে ভারতের সঙ্গে তারাও বাণিজ্য বন্ধের কথা ঘোষণা করেছে। দিন দিন দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হচ্ছে।