রাহুল গাঁধী এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ডোকলাম নিয়ে টানাপড়েনের সময়ে চিনের রাষ্ট্রদূত লু ঝাওহুইয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন রাহুল গাঁধী। আর গত কাল তিনি বৈঠক করেছেন ভারতে নিযুক্ত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন সহ-সচিব অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে। আগামী ২২ তারিখে সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে আন্তর্জাতিক আর্থিক সম্মেলনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, দাভোস সম্মেলনের আগে রাহুল–জাস্টার বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এ বার সক্রিয় হতে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি।
বিদেশ মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, দাভোসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বৈঠক হচ্ছে না। কিন্তু তা না হলেও ওই সম্মেলনে মার্কিন সংস্থাগুলির আধিপত্য থাকছেই। মোদী যখন কিছুটা প্রথাবিরোধী ভাবেই সেখানে গিয়ে (দাভোস সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীদের যোগ দেওয়াটাই রেওয়াজ) রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন, তার আগে হোয়াইট হাউসের কাছে নিজের উপস্থিতি এবং মতামত তুলে ধরলেন রাহুল। ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা হয়েছে দু’পক্ষের।
এ দিকে, বিশ বছর পরে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দাভোস সম্মেলনে যাচ্ছেন— এই বিষয়টিকে আজ সগর্বে তুলে ধরেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। মন্ত্রক জানাচ্ছে, ওই সম্মেলনে মোদীর মূল মন্ত্র হতে চলেছে, ‘সংস্কারমুখী ভারতে বিপণন’। দাভোসে থাকবেন ৭০টি দেশের শীর্ষ প্রতিনিধিরা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার ৩৮ জন শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। মোদী তাঁদের বোঝাতে চাইবেন যে, ভারতই এই মুহূর্তে লগ্নির সব চেয়ে আদর্শ গন্তব্য।
সেই চেষ্টার যে ত্রুটি রাখা হচ্ছে না, তা স্পষ্ট। বাণিজ্য মন্ত্রকের ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশন (ডিআইপিপি)-এর সচিব রমেশ অভিষেক জানাচ্ছেন, দাভোস সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রায় দেড় হাজার লোককে ভারতীয় রান্না খাওয়ানো হবে। এই মহাভোজের আগে ২২ তারিখে ৪০ জন আন্তর্জাতিক কর্পোরেট প্রধানকে (২০ জন ভারতীয়) নৈশভোজে আপ্যায়ন করবেন মোদী নিজে। ‘ভারতীয়ত্ব’ তুলে ধরতে দু’জন যোগ শিক্ষকও যাবেন দাভোসে। আল্পসের পটভূমিতে তাঁদের যোগ প্রদর্শন করার কথা!
রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, দেশে যখন জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা, তখন বিদেশে গিয়ে নিজের তথা সরকারের ভাবমূর্তিকে চাঙ্গা করতে তৎপর প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণেই যোগ, বিনিয়োগ, মহাভোজ— কিছুই বাকি রাখছে না মোদী সরকার।