মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল। আগামী ১৫ ডিসেম্বর কলকাতায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের একটি বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন তিনি। ওই দিনই নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব দিয়েছেন পটেল। নবান্ন অবশ্য এখনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের সাক্ষাৎ চূড়ান্ত করেনি। তবে এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন— সাক্ষাৎ হতে পারে, নোট-বাতিলের আবহে যা তাৎপর্যপূর্ণ।
নবান্নের এক সূত্র জানান, ‘‘নোট-বাতিল পর্বের অনেক আগেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর খসড়া কার্যসূচিতে তা অন্তর্ভুক্তও করা হয়। কিন্তু নোট-বাতিলের পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে আর কোনও চিঠি আসেনি। তাই বৈঠকও চূড়ান্ত হয়নি।’’
উর্জিত দেখা করতে চাইলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী কি রাজি হবেন? নবান্নের এক কর্তার ব্যাখ্যা, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সাংবিধানিক পদ। কে ওই পদে রয়েছেন, সেটা বড় কথা নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করতে চাইলে সাক্ষাৎ না হওয়ার কারণ নেই।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ব্যাঙ্কের কোনও বৈঠকে বা অনুষ্ঠানে গভর্নর কোনও রাজ্যে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাই রীতি। সেই কারণেই গভর্নরের অফিস থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছিল। এমনিতে মুখ্যমন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গর্ভনরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ কম। তাই সৌজন্য সাক্ষাতেই রাজ্যের স্বার্থ সংক্রান্ত কিছু কথা সেরে নেন মুখ্যমন্ত্রীরা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক কর্তা জানান, ২০১০ সালে তৎকালীন গভর্নর ডি সুব্বারাও মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। রাজ্যে বেড়ে চলা বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির অনিয়ম এবং বেআইনি কাজকর্ম নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বুদ্ধদেববাবু। সেই সুবাদেই সুব্বারাও এক জন ডেপুটি গভর্নরকে মাথায় রেখে ওই ব্যাপারে খোঁজখবর করার জন্য তদন্ত কমিটি গড়েন।
২০১১ সালে মমতার সঙ্গেও সুব্বারাওয়ের বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী গভর্নর রঘুরাম রাজন পর পর চার বছর সময় চেয়েও পাননি।
এ বার উর্জিত কলকাতা সফরের আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন। তবে এর মধ্যেই চলে এসেছে নোট-বাতিল পর্ব। এমনকী, গত বৃহস্পতিবারই উর্জিতের নাম করে গুজরাত পেট্রোলিয়াম কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার কোটি ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মমতা। সেই উর্জিতের সঙ্গেই এখন তাঁর বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা। এক প্রশাসনিক কর্তার মতে, এমন সুযোগ চট করে আসে না। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বরং নোট বাতিলের নেতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরুন।