সংসদ ভবন চত্বরে বিরোধীদের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
বিরোধী সাংসদদের সাসপেনশনেও শান্তি ফিরল না সংসদে। লোকসভায় রংবোমা হানার ঘটনার জেরে সংসদ চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুক্রবারও বিক্ষোভ দেখালেন বিরোধী সাংসদেরা। দফায় দফায় অশান্তির জেরে সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে গেল লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন।
সংসদের ভবনের সামনেও শুক্রবার বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। সেখানে হাজির ছিলেন বৃহস্পতিবার সাসপেন্ড হওয়া সাংসদেরাও। বিরোধীদের দাবি, বুধবারের হানাদারি নিয়ে শীতকালীন অধিবেশনে বিবৃতি দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন চলার কথা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে ১৫ বিরোধী সাংসদের সাসপেনশনের জেরে অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতেও অশান্তির সম্ভাবনা থাকছে।
গত ২৮ মে বিপুল সমারোহে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেপ্টেম্বরে গণেশ চতুর্থী তিথিতে অধিবেশন শুরু হয়েছিল নতুন ভবনে। কিন্তু তার তিন মাসের মধ্যেই সুরক্ষার গুরুতর গাফিলতি দেখা গেল সেখানে। বুধবার তিন স্তরের সুরক্ষা বলয় টপকে কী ভাবে চার বিক্ষোভকারী গ্যাস-ক্যানিস্টার নিয়ে ভবনের সংরক্ষিত এলাকায় পৌঁছে গেলেন, এমনকি তাঁদের মধ্যে দু’জন লোকসভার অধিবেশনে ঢুকে দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মারার সুযোগ পেলেন, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সরব হন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। শাহের বিবৃতি দাবি করে সংসদের দু’কক্ষেই ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলেন বিরোধী সাংসদেরা।
বিক্ষোভ সামাল দিতে না-পেরে রাজ্যসভার অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড় শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য সাসপেন্ড করেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। লোকসভায় সাসপেন্ড করা হয় ১৪ সাংসদকে। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের ন’জন, সিপিএমের দু’জন, ডিএমকের দু’জন এবং সিপিআইয়ের এক সাংসদ রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। অধিবেশন শুরুর পরে মোদী-শাহের বিবৃতির দাবিতে ওয়েলে নেমে শুরু হয় বিক্ষোভ। পাল্টা স্লোগান ওঠে বিজেপির বেঞ্চ থেকেও। অশান্তির জেরে প্রথমে বেলা ১২টা, তার পরে ২টো, শেষে সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি হয় লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন।