ছবি: পিটিআই।
সবই পরিকল্পনা মতো চলছিল। অধিবেশন শুরুর আগেই সংসদ ভবনে গাঁধীমূর্তির পাদদেশে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ। সংসদ শুরু হলে সকাল এগারোটা থেকেই উন্নাও নিয়ে হইচই বাধানো। তার পর রাহুল গাঁধী নিজে ধারালো আক্রমণে যাবেন, এমনটাই ঠিক ছিল ।
সংসদ শুরু হল। বিরোধীরা সরব হলেন। স্পিকার কংগ্রেসকে বলার অনুমতি দিলেন। পরিকল্পনার তাল কাটল এই বারে, রাহুল বললেন না। হাল ধরলেন অধীর চৌধুরী। স্পিকার পুরোটা শুনলেন না। কংগ্রেস সভাকক্ষ ত্যাগ করল। তৃণমূলের সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলার চেষ্টা করলেন। অনুমতি মিলল না। তাঁরাও সভাকক্ষ ত্যাগ করলেন। ফিরে এসে ফের চেষ্টা করলেন। ফের সুযোগ পেলেন না। আবার সভাকক্ষ ত্যাগ।
অপ্রত্যাশিত নয় কোনওটাই। কিন্তু রাহুল চুপ কেন? কংগ্রেসের সূত্রের মতে, সনিয়া গাঁধী আজ একটু অসুস্থ। সংসদে আসেননি। সকালে দলের বৈঠকে ছিলেন রাহুল। সকলে তাঁকেই বলতে বলেন। রাহুল রাজি হন। তাঁর জন্য একটি ধারালো বিবৃতি তৈরিও হচ্ছিল। কিন্তু সময়ে সেটি তৈরি হয়নি, তাই রাহুল বলেননি।
কংগ্রেসের কিছু সাংসদের প্রশ্ন, ‘‘যদি অন্য নেতারা সংসদে বলতে পারেন, রাহুল নন কেন?’’ উত্তরে দলের অন্য অংশের বক্তব্য, ‘‘রাহুলের প্রতিটি শব্দের ওজন আছে। তার চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। লিখিত বিবৃতির বাইরে যাওয়া উচিত নয়।’’ সংসদ ভবন থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকরাও রাহুলকে প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনি সংসদে বললেন না! লখনউ যাবেন?’’ রাহুল বলেন, প্রিয়ঙ্কা গাঁধীই উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে। তাঁর সঙ্গেই কথা বলে স্থির করবেন, লখনউতে প্রিয়ঙ্কা একা যাবেন নাকি দু’জনে যাবেন! প্রিয়ঙ্কা নিজে যাননি কেন? দলীয় সূত্রে খবর, রবার্ট বঢরাও অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তাই সক্রিয় ছিলেন টুইটারেই। টুইটে আজও প্রিয়ঙ্কা লেখেন, ‘‘ঈশ্বরের দোহাই মিস্টার প্রধানমন্ত্রী, এই অপরাধী ও তাঁর ভাইকে রাজনৈতিক শক্তি দেওয়া বন্ধ করুন।’’ প্রিয়ঙ্কা টুইটের সঙ্গে এফআইআর-এর কপিও জুড়ে দিয়েছিলেন। তাতে ধর্ষিতার নাম ছিল। তা নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় সেটি মুছে আবার নতুন টুইট করেন।
উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্রদেব সিংহ উত্তরে জানান, কুলদীপ সেঙ্গারকে সাসপেন্ডই করে রেখেছে দল।
এর মধ্যেই লোকসভায় আজ ‘উত্তরপ্রদেশের একদিনের মুখ্যমন্ত্রী’ বলে পরিচিত বিজেপির সাংসদ জগদম্বিকা পাল বলেন, যে ট্রাক ধর্ষিতার গাড়িতে ধাক্কা মারে, তার মালিক সমাজবাদী পার্টির নেতা নন্দু পালের ভাই। সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব আজ ধর্ষিতাকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে এই অভিযোগ শুনে তিনি বলেন, ‘‘সরকার, পুলিশ বিজেপির। তারা যা খুশি বলতে পারে।’’