Lok Sabha Election 2019

এনডিএ-তে ফাটল, জোট এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন উপেন্দ্র কুশওয়াহা

বিহারে নীতীশ কুমারকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় চটেছিলেন তিনি। তার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:১৭
Share:

উপেন্দ্র কুশওয়াহা।—ফাইল চিত্র।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের ধাক্কা বিজেপির। এ বার এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন উপেন্দ্র কুশওয়াহা। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। সোমবার ছেড়ে দিয়েছেন সেই পদও। জমা দিয়েছেন নিজের ইস্তফাপত্র।২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আসনসংখ্যা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই শাসকদলের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল তাঁর রাষ্ট্রীয় লোক শক্তি পার্টির(আরএলএসপি)। বিহারে নীতীশ কুমারকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় চটেছিলেন তিনি। তার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

নিজের ইস্তফাপত্রে কুশওয়াহা লেখেন, ‘‘অনেক আশা-ভরসা নিয়ে পাঁচ বছর আগে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সে যোগ দিয়েছিলাম। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে বিহারের মানুষ এবং দেশবাসীকে ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আপনারা। তাতে বিশ্বাস করেই নিঃশর্তভাবে বিজেপিকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন আপনারা। সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রিসভার কাজকর্ম ব্যাহত করেছেন। নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে ব্যবহার করেছেন মন্ত্রিসভাকে। মন্ত্রী-আমলাদের ঠুঁটো জগন্নাথ করে রেখেছেন। কারও সঙ্গে কোনওরকম আলাপ আলোচনার প্রয়োজনটুকু বোধ করেন না আপনারা। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং বিজেপি সভাপতি নিজেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন।’’ দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে মাথাব্যথাই নেই সরকারের, শুধুমাত্র বিরোধীদের পর্যুদস্ত করাই তাদের লক্ষ্য বলেও অভিযোগ তুলেছেন কুশওয়াহা। তবে শুধুই কি আশাভঙ্গ হয়েছে বলে বিজেপির সঙ্গ ছাড়লেন তিনি? নাকি রয়েছে অন্য কোনও কারণও! বিহারেলোকসভা আসন ৪০টি। ২০১৪ সালে ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল আরএলএসপি। তিনটিতেই জয়লাভ করেছিল তারা। তাই আগামী বছর নির্বাচনে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল এবং তাদের ১৭টি করে আসন দেওয়া হোক বলে দাবি তুলেছিল তারা।

কিন্তু তাতে সায় দেননি অমিত শাহরা। বরং গতবারের চেয়েও কম, মাত্র দু’টি আসন দিতে চেয়েছিলেন। অথচ নীতীশ কুমারের দাবি দাওয়া মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা, যা একেবারেই মনে ধরেনি কুশওয়াহার। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে বিজেপি নেতৃত্বকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন তিনি। তা পেরিয়ে গেলেও সুরাহা হয়নি। তাই নাকি শিবির ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তবে হঠাত্ করে এই সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। বরং রীতিমতো হিসাব কষে এগিয়েছেন বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

Advertisement

আরও পড়ুন: উপলক্ষ সনিয়া, আজ দিল্লিতে বিরোধী বৈঠকে মমতাও, সবার চোখ আগামিকালের ফলে​

বিজেপির সঙ্গে ঝামেলা চলাকালীন গত কয়েক মাসে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে কুশওয়াহার। তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলভারি করতে মুখিয়ে রয়েছেন সংযুক্ত জনতা দলের বহিষ্কৃত নেতা শরদ যাদব। আবার জেলবন্দী লালুপ্রসাদের অনুপস্থিতিতে, তাকে কাছে টেনে নিতে পারেন তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দলও। তাতে বিহারে বিরোধীদের পাল্লা ভারী হবে।

এ দিকে, মঙ্গলবার থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে বৈঠক বিজেপি এবং এনডিএ শরিকদের। আবার সনিয়া গাঁধীর উপস্থিতিতে বৈঠক স্থির হয়েছে বিরোধী দলগুলিরও। আক্রমণের ছক কষে নিতেই এই বৈঠক। আর বৈঠক শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এনডিএ-র বৈঠকে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। ইস্তফা দেওয়ার আগে এ দিন সকালে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখাও করেন। তাই বিকেলে বিরোধীদের বৈঠকে তিনি হাজির থাকতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির টাকার হিসাব জানতে সিবিআই জেরা সুব্রত বক্সীকে

তবে সম্পর্কে ইতি টানলেও, বিজেপির সঙ্গে ঝামেলা নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি কুশওয়াহা। যদিও গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বিজেপি এবং কেন্দ্র সরকারকে নিশানা করে তাঁর দল আরএলএসপি। তাতে বলা হয়, ‘‘মন্দির-মসজিদ নির্মাণের বিরোধী নই আমরা। কিন্তু সমাজে বিভাজন এবং অশান্তি সৃষ্টি করে এমন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত নয় রাজনৈতিক দলগুলির। কোথায় দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা এবং বেকারত্ব দূর করতে পদক্ষেপ করবে তা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তিতে মদত দিয়ে চলেছে জোটের বৃহত্তম দলটি। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement