ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে চতুর্থ দফার ভোটে সন্ত্রাসবাদ প্রশ্নে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর কৌশল নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমাজবাদী পার্টি (এসপি) নেতৃত্ব ও সন্ত্রাসবাদীদের সম্পর্ক নিয়ে সরব হয়েছিলেন। আজ উত্তরপ্রদেশের পিলিভিতে প্রচারে এসপি ও আর এক বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে জঙ্গিদের সম্পর্ক নিয়ে প্রচারের সুর তীব্র করলেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ দিকে পিলিভিতে আজ অমিত শাহ প্রচারে গেলেও, অনুপস্থিত রইলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী।
সম্প্রতি গুজরাতের আদালত সে রাজ্যের স্বামী নারায়ণ মন্দিরে হামলার ঘটনায় ৩৮ জন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আবহে নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে হওয়া হামলার বিচারে মৃত্যুদণ্ডের আদেশকে হাতিয়ার করে নির্বাচনী প্রচারে প্রবল ভাবে সক্রিয় হওয়ার কৌশল নেয় বিজেপি।
আজ পিলিভিতে সেই কৌশল মেনেই কেবল এসপি নয়, শাহ কংগ্রেসকেও আক্রমণের নিশানায় নিয়ে আসেন। এ দিনই এই নির্বাচনের সময়ে আমদাবাদ সন্ত্রাসের ঘটনার উল্লেখ করা অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। রাজনীতিকদের মতে, আজ তারই জবাবে সরব হন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাস রোখার মতো বিষয় প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর কাছে অর্থহীন কথাবার্তা বলে মনে হয়। অন্য দিকে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান ও প্রবীণ নেতা সলমন খুরশিদ আমদাবাদ কাণ্ডে দোষী সিমি (স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইসলামিক ইন্ডিয়া)-এর সদস্যদের নির্দোষ বলে দাবি করে ওই অভিযুক্তদের মুক্তির জন্য দাবি তুলছেন।’’
শাহের দাবি, এসপি আবার তাদের দলীয় ইস্তাহারে সঙ্কটমোচন মন্দির ও লখনউ বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের মুক্ত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শাহ বলেন, “যারা স্রেফ ভোটের কথা মাথায় রেখে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে খেলা করা তারা কি আদৌ ভোট পাওয়ার যোগ্য? আসলে এসপি ও কংগ্রেস দুই দলই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের যে লড়াই চালু রয়েছে তাকে দুর্বল করার প্রতিজ্ঞা করেছে।’’ শাহের দাবি, গত পাঁচ বছরে যোগী শাসনে উত্তরপ্রদেশে যে মাফিয়া রাজ শেষ হয়েছে, সরকার পরিবর্তন হলে তা ফিরে আসার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, এসপি-কে সঙ্গে সংখ্যালঘু ‘অপরাধী’দের এক সারিতে বসিয়ে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ করতে চাইছেন বিজেপি নেতারা।
গত কয়েক দিন ধরেই সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে এসপি নেতৃত্বের সুসম্পর্কের যে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্ব তুলেছেন তার জবাব দিতে আজ তৎপর হন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। গত কাল উত্তরপ্রদেশের হরদোই এলাকায় প্রচারে আমদাবাদ হামলার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘ওই হামলা চালানোর জন্য সন্ত্রাসবাদীরা সাইকেলকে বেছে নিয়েছিল....। তিনি প্রশ্ন তোলেন এত যানবাহন থাকতে হঠাৎ কেন সন্ত্রাসবাদীরা সাইকেলই বেছে নিল!’’ রাজনীতির অনেকের মতে, এসপি-র সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের সম্পর্কের কারণে সাইকেল বেছে নেওয়া হয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছেন মোদী। যার জবাবে আজ
অখিলেশ বলেন, ‘‘সাইকেল হল দেশের আমজনতার বাহন। তাই সাইকেলের অপমান হল গোটা
দেশের অপমান।’’
সামাজিক মাধ্যমে এসপি-র প্রতীক চিহ্ন সাইকলের একটি ছবি ও কবিতা পোস্ট করেন অখিলেশ। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘খেত ও কৃষককে জুড়ে রেখে কৃষকের আর্থিক সমৃদ্ধির ভিত্তি তৈরি করে আমাদের সাইকেল। সামাজিক বন্ধনকে উপড়ে ফেলে বাড়ির মেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দেয় সাইকেল। মূল্যবৃদ্ধিকে উপেক্ষা করে ছুটে চলে আমাদের সাইকেল। সাইকেল আমজনতার বিমান, সাইকেল গ্রামীণ ভারতের গর্ব।’’