উন্নাওয়ের তরুণীর শেষকৃত্যে উপচে পড়েছে ভিড়।
বিক্ষোভ, তা প্রশমনে প্রশাসনের আশ্বাস এবং রাজনীতিকদের তৎপরতা— সব মিলে এক বেলার টানটান নাটক। তার পরে নিজের গ্রামের পৈতৃক জমিতে সমাহিত করা হল উন্নাওয়ে নির্যাতিতা তরুণীর দেহ। আর তাঁকে শেষ বিদায় দিতে এসে ধর্ষকদের দ্রুত এবং চরম শাস্তির দাবিতে এক চোয়াল-শক্ত লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা করলেন মানুষ।
দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল থেকে তরুণীর দেহ শনিবার রাতেই বাড়ি পৌঁছেছিল। সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান সেখানে। রাতেই এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দুই মন্ত্রী স্বামীপ্রসাদ মৌর্য এবং কমলরানি বরুণ। সকালে তাঁরা নির্যাতিতার গ্রামে পৌঁছলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান শুরু হয়। আসরে নেমে এসপি-র নেতা সুনীল সিংহ সজন বলেন, ‘‘যোগী সরকারের আমলে উত্তরপ্রদেশের কোনও মহিলা নিরাপদ নয়।’’ পুলিশ ভিড় সরাতে গেলে হাতাহাতির উপক্রম হয়। এক পুলিশ কর্তা বলে বসেন, ‘‘এখানে কি শুটিং হচ্ছে? কী দেখার আছে?’’ এর পরে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। নির্যাতিতার দিদি বলেন, সরকারের প্রস্তাবিত ২৫ লক্ষ টাকা ও বাড়ি করে দেওয়ার প্রস্তাব তাঁরা মানছেন না। মুখ্যমন্ত্রী না এলে বোনের শেষকৃত্য হতে দেবেন না। পরিবারের এক জনের সরকারি চাকরি চাই, তাঁর নিরাপত্তা চাই। এক সপ্তাহের মধ্যে দোষীদের ধরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবিও জানানো হয়। জনতাও তাঁকে সমর্থন জানায়।
ছ’ফুট বাই তিন ফুটের সদ্য খোঁড়া গর্তের পাশে পড়ে থাকে হলুদ কাপড়ে মোড়া নির্যাতিতার দেহ। আগের দিনই দাদা জানিয়েছিলেন, বোনের দেহ তো পুড়েই গিয়েছে। দাহ না করে তাই জমিতে সমাহিত করেই শেষকৃত্য হবে। তার উপরে তৈরি হবে স্মারক বেদি। বিকেল নামার মুখে পুলিশ কমিশনার মুকেশ মেশরাম জানান, দাবি মেনে নির্যাতিতার বোনকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এক জনকে সরকারি চাকরিও দেওয়া হবে। পরিবার চাইলে অস্ত্রের লাইসেন্সও দেবে পুলিশ। এ ছাড়া অর্থসাহায্য এবং সরকারি যোজনায় বাড়ি করে দেওয়া হবে তাঁদের।
আরও পড়ুন: উপহার সিনেমা হলের স্মৃতি ফিরল দিল্লিতে, অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪৩ জনের মৃত্যু
গণধর্ষণের শিকার লোহার তরুণী আদালতে অভিযোগ করেছিলেন ‘স্বামী’ শিবম ত্রিবেদী ও তার ভাই শুভমের বিরুদ্ধে। আদালতে যাওয়া ঠেকাতে নির্যাতিতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের পরে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পাওয়া অভিযুক্তেরা। কর্তব্যে অবহেলার জন্য রাতে উন্নাও বিহার থানার ৭ পুলিশকে সাসপেন্ড করেছে সরকার।
আরও পড়ুন: গোমূত্রের রমরমার যুগে ব্যবসা করছে গঙ্গাজলও, বিক্রি হচ্ছে মুদি দোকানে!