উন্নাওয়ের ধর্ষিতাকে যেখানে পোড়ানো হয়, সেখানে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ছবি- পিটিআই।
আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে উন্নাওয়ের ধর্ষিতাকে রেল স্টেশনের কাছে ঘিরে ধরে প্রথমে বেত দিয়ে পেটানো হয়। তার পর তাঁর গলায় বসানো হয় ছুরির কোপ। রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রায় অচৈতন্য ধর্ষিতা তরুণী পুলিশের কাছে এই বয়ান দিয়েছেন। জানিয়েছেন, রায়বঢ়েলীর আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার জন্য তিনি ভোর চারটায় তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন রেল স্টেশনে। পথে ওঁত পেতেছিলেন পাঁচ জন। যাঁদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি। বাকি তিন জনের মধ্যে দু’জন তাঁদের বাবা।
ধর্ষিতা জানিয়েছেন, ওই পাঁচ জন তাঁকে জোর করে ধরে নিয়ে যায় গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে। সেখানে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তাকে বেত দিয়ে পেটানো হয়। তাতে রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁর গলায় ছুরির কোপ বসানো হয়। তার পর পেট্রল ছিটিয়ে দেওয়া হয় তাঁর সারা গায়ে। ধরানো হয় আগুন।
পুলিশকে ধর্ষিতা বলেছেন, “ঘটনার পর আমি চেঁচাতে থাকলে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তাঁরাই পুলিশ ডাকেন।’’
আরও পড়ুন- আদালতের পথে ধর্ষিতাকে হত্যার চেষ্টা উন্নাওয়ে, ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ তরুণী
আরও পড়ুন- কোর্টের পথে উন্নাওয়ের অন্য ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে
যে দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণী, তাঁদের এক জন জেলে আটক শিবম ত্রিবেদী জামিনে ছাড়া পান পাঁচ দিন আগে। অন্য অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদীকে পুলিশ ধরতে পারেনি। কিন্তু সে দিন শিবমের সঙ্গেই ছিলেন শুভম। তিনি শিবমের প্রতিবেশী।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি দেখেছিলেন, আগুনের মধ্যে ছুটে বেরনোর সময় আর্ত চিতকার করছেন ধর্ষিতা। তিনি তখন তাঁর মোবাইল ফোন থেকে পুলিশের ১০০ হেল্পলাইন নম্বরে ডায়াল করেন।
ধর্ষিতাকে তার পর বিমানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সেখানে তাঁকে ভর্তি করানো হয় সফদরজঙ হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, সে দিন আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে যাঁরা চড়াও হয়েছিলেন ধর্ষিতার উপর, তাঁদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের কাছে দায়ের করা এফআইআরে ধর্ষিতা লিখেছেন, “প্রথমে আমার সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল শিবম। সেই সময়েই শিবম আমাকে ধর্ষণ করে। তার ভিডিয়োও তুলে রাখে। আমি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে আমাকে শাসাতে থাকে, সেই ভিডিয়ো যে সর্বত্র ছড়িয়ে দেবে। ওদের ভয়ে গত বছরের শেষের দিক থেকেই আমি রায়বঢ়েলীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করি।"