মৃত মনোজ সেঙ্গার। —ফাইল চিত্র
উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে নাটকীয় মোড়। নির্যাতিতার গাড়ি দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত মনোজ সিংহ সেঙ্গারের মৃত্যু হল দিল্লির একটি হাসপাতালে। মনোজ উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের ছোট ভাই। মনোজের মৃত্যুর জেরে উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
মনোজ সেঙ্গারের পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার রাত আড়াইটে নাগাদ বাড়িতে প্রচণ্ড অসুস্থ বোধ করেন তিনি। বুকে ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট এবং অস্বস্তি বোধ করেত থাকেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে দিল্লির মৌলানা আজাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। রবিবার সকালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিক তদন্তে তাঁদের অনুমান, হৃদযন্ত্রের কোনও সমস্যাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
অন্য দিকে খবর পেয়েই উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লির হাসপাতালে গিয়েছেন মনোজের ভাগ্নে প্রখর প্রতাপ সিংহ। তিনি জানিয়েছেন, উন্নাও ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার কারণেই মামা দিল্লিতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এটা বিরাট ধাক্কা। মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সেটা স্পষ্ট হবে।’’
আরও পড়ুন: গতি ঘণ্টায় ২০০ কিমি, ঘূর্ণিঝড় কিয়ারের দাপটে উত্তাল আরব সাগর, ৪ রাজ্যে সতর্কতা জারি
উন্নাওয়ের এক নাবালিকা অভিযোগ তোলেন, ২০১৭ সালে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার তাঁকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও থানায় সেই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি ওই নাবালিকা। উল্টে বিধায়ক সেঙ্গারের সম্মানহানির অভিযোগে তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
এর পরে গত বছর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে তিনি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই নাবালিকা। ওই ঘটনার পরের দিনই লক আপে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর বাবার। পুলিশের বিরুদ্ধে লক আপে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এর পরেই শোরগোল পড়ে যায়। অবশেষে এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ঘটনার তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআই-এর উপর।
আরও পড়ুন: বাগাদাদিকে ধরতে মার্কিন অভিযান, আত্মঘাতী বোমায় নিজেকে ওড়াল আইএস শীর্ষ নেতা
তদন্ত চলাকালীনই ঘটে যায় আরও মর্মান্তিক ঘটনা। রায়বরেলি থেকে একটি গাড়িতে করে ফিরছিলেন নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পথে একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারলে নির্যাতিতার মাসি এবং কাকিমার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন নির্যাতিতা। এই ঘটনায় আবার অভিযোগ উঠেছিল, নিছক দুর্ঘটনা নয়, চক্রান্ত করেই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নির্যাতিতাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন কুলদীপ সেঙ্গার ও তাঁর লোকজন। এই দুর্ঘটনাতেই অভিযুক্ত ছিলেন মনোজ সেঙ্গারও।