শনিবার পটনায় সাংবাদিক বৈঠকে লালু প্রসাদ। ছবি: উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
সেই চেনা ভঙ্গিটা কি উধাও? ভেতরের চাপা উত্তেজনাটা কি ঢাকার চেষ্টা করছেন? কোথায় গেল সেই স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা? শনিবার দুপুরে পটনায় দলীয় কার্যালয়ে আরজেডি সুপ্রিমোকে একটু যেন গম্ভীরই লাগল! অথচ বার বার বলে গেলেন মহাজোট ১৯০টি আসনের বেশিই পাবে। বুথ ফেরত সমীক্ষাকে এক হাতে তুলোধনা করে অন্য হাতের দু’আঙুলে তুলে ধরলেন ভিক্টরি চিহ্ন।
দুধ সাদা এসইউভি থেকে নেমে সরাসরি যখন কার্যালয়ের বারান্দায় গিয়ে বসলেন, উত্তেজনা টের পাওয়া গেল হাঁটাচলায়। কেন লালু চিন্তায়? তবে কি বিজেপি জোট জিততে পারে? এমনটা যে কোনও ভাবেই হবে না তা প্রতিটি বাক্যেই তুলে ধরলেন লালু। জানিয়ে দিলেন, জেতার পর বারাণসী যাবেন। প্রতিপক্ষ সেই নরেন্দ্র মোদী। সেখানে গিয়ে উন্নয়নের খানাতল্লাশি করবেন। আর তার পরেই আসবেন কলকাতা। ব্রিগেডে সভা করবেন। ধর্মের জিগির তুলে বিজেপি কোনও ভাবেই টিকতে পারবে না। দাবি লালুর। লালু যখন ধর্মীয় ভাবে বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে মোদীকে তুলোধনা করছেন, তার একটু পরে তাঁরই দলের সাংসদ মনোজ ঝা জাতপাতের কথা তুলে ধরলেন।
বিহারের ভোটের ফলের দিকে তাকিয়ে বাংলার রাজনৈতিক শিবির
ধর্মের ভিত্তিতে যদি রাজনীতি না পসন্দ হয়, তবে জাতপাতের ভিত্তিতেই বা কেন? মনোজের কথায়, বিহারে একটা বড় অংশের মানুষ দলিত বা মহাদলিত সম্প্রদায়ের। এর বাইরেও সবচেয়ে অনগ্রসর শ্রেণির মানুষরা তো আছ্নই। তাদের মূল স্রোতে জুড়ে নিতে মহাজোটের জেতাটা খুবই জরুরি। বললেন মনোজ।
এ সবের মধ্যেই নিরাপত্তা রক্ষী পরিবৃত হয়ে এসইভিতে চড়ে বেরিয়ে পড়লেন লালু। তার পরই সব কিছু কেমন শুনশান হয়ে গেল। আরজেডি কার্যালয়ে রয়ে গেলেন হাতে গোনা কয়েক জন নেতা-কর্মী। আগামিকাল ভোটগণনার সময় যাঁদের লালু বুথ থেকে একেবারেই বেরোতে বারণ করেছেন। যে চা ওয়ালা বহু প্রতিক্ষায় ছিলেন, নেতা চলে যাওযার পর তাঁর বেশ বিক্রিবাটা হতে পারে, কোথায় কি! সব ভোঁ ভাঁ।
লালুর সঙ্গেই ভিড়টা ফাঁকা হয়ে যাবে সেটা তিনি ভাবেননি বোধহয়।