আরজি কর-কাণ্ডে মুখ খুললেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আরজি করের ওই ঘটনাকে ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ধর্মেন্দ্র বলেন, “এই জঘন্য ঘটনার জন্য যত কড়া ভাষাতেই নিন্দা করা হোক, তা কম হয়ে যাবে।” রাজ্য সরকারকে এর জন্য ‘জবাবদিহি’ করতে হবে বলেও দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিশেষ করে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিছুদিন আগে যাদবপুরে একটি ঘটনা ঘটেছিল। দ্বিতীয়বার একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটল।”
ঠিক এক বছর আগের ঘটনা। এই অগস্ট মাসেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। উঠে এসেছিল র্যাগিংয়ের অভিযোগ। আরজি করের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর কথাও মনে করিয়ে দেন ধর্মেন্দ্র। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, বার বার এমন ঘটনা রাজ্যে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যাতে আইনি পদক্ষেপ করে, সে কথাও বলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলায় সেমিনার কক্ষ থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আন্দোলনের ঝাঁজ এখনও কমেনি। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সন্দেহ, ঘটনার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। এই আবহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জানিয়ে দিয়েছেন, রবিবারের মধ্যে পুলিশ তদন্তের কিনারা করতে না পারলে, এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়ে দেওয়া হবে।
আরজি করের ঘটনার আঁচ ক্রমেই দেশের অন্যান্য প্রান্তের হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দিল্লি, মুম্বই-সহ একাধিক শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন। পোস্টার হাতে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন দিল্লি এমসের চিকিৎসকরাও। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও আরজি করের ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে ঠিকই, কিন্তু আন্দোলনকারীদের সন্দেহ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত। সেই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেননি পুলিশ কমিশনারও। তিনিও আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ করেছেন যদি কারও উপর সন্দেহ জাগে, তা পুলিশকে জানানোর জন্য। আশ্বস্ত করেছেন, আরও কেউ জড়িত থাকলে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।