কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল ছবি।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বা কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদটি ‘অস্থায়ী’ বা ‘সাময়িক’ হওয়ায় তা বাতিল করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু যদি সেই অনুচ্ছেদটি অস্থায়ী (টেম্পোরারি) না হত তবে তা বাতিল করা সম্ভব হত কি না তা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আইনের খসড়া কী ভাবে লেখা উচিত তা নিয়ে আজ থেকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে সংসদের অ্যানেক্স ভবনে। কেন্দ্র ও রাজ্য থেকে আসা প্রতিনিধিদের নিয়ে তিন দিনের ওই কর্মসূচির আজ সূচনা করেন অমিত শাহ। আজ নিজের বক্তব্যে শাহ আইনের ভাষা সহজ, সরল ও স্পষ্ট করার জন্য আবেদন করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আইন রচনার ক্ষেত্রে ভাষা এতটাই সহজ-সরল হওয়া উচিত যে তা বুঝতে যাতে কারও কোনও সমস্যা না হয়। কোনও আইন রচনার সাফল্য তখনই আসে যখন সেই আইন কোনও বিতর্কের জন্ম দেয় না। আইন তৈরির পরে পরবর্তী ২৫ বছর যদি তা নিয়ে কেউ আদালতের ব্যাখ্যা না চান সেখানেই সেই আইন রচনার সাফল্য।’’ তাঁর মতে আইনি ভাষায় যদি জটিলতা থেকে যায় তা হলেই নিজস্ব ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি হয়।
এর পরেই শাহ বলেন, ‘‘সংবিধান সভায় ৩৭০ নম্বর অনু্চ্ছেদ নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল তার কোনও লিখিত বিবরণী নেই।’’ পরবর্তী কালে সংবিধান যখন লেখা হয়েছিল সে সময়ে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদকে ‘অস্থায়ী সংস্থান’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। এই অনুচ্ছেদে জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি ছিলন গেরুয়া শিবিরের। অবশেষে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই ওই অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহের প্রশ্ন, ওই ‘টেম্পোরারি’ বা অস্থায়ী শব্দটি যদি না থাকত তাহলে কী হত!’’ অনেকের মতে, ওই অস্থায়ী শব্দটি না থাকলে অনুচ্ছেদ ৩৭০ রদ করা আদৌ সম্ভব হত কি না তা নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন শাহ। মূলত যাঁর হাত দিয়েই ওই অনুচ্ছেদ রদ হয়েছিল সেই শাহের প্রশ্ন, ‘‘সংবিধানের কোনও অনুচ্ছেদ কি অস্থায়ী হতে পারে? কিন্তু যাঁরা সে সময়ে সংবিধান লিখেছিলেন তাঁরা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ওই অনুচ্ছেদের আগে অস্থায়ী শব্দটি জুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে কোনও আইন সাময়িক বা অস্থায়ী হতে পারে না। কারণ তাতে পরিবর্তন হতে পারে।’’