গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানিকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হল। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে ঘোষণা করল, তারা ফের ক্ষমতায় এলে আদানি গোষ্ঠীর হাত থেকে ধারাভি পুনরুন্নয়ন প্রকল্পের বরাত কেড়ে নেওয়া হবে।
আদানি-অম্বানীর মতো মুষ্টিমেয় কিছু শিল্পপতির হাতে একচেটিয়া ব্যবসার অধিকার চলে যাচ্ছে বলে বহু দিন ধরেই সরব রাহুল গান্ধী। তিনি এই একচেটিয়া কারবারিদের সঙ্গে ব্রিটিশদের ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র তুলনা টেনেছেন। রাহুলের সেই ভাবনার প্রতিফলন এ বার মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের জোট মহা বিকাশ আঘাড়ীর মধ্যে দেখা গেল। এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি এলাকা বলে পরিচিত ধারাভির পুনরুন্নয়নের জন্য মহারাষ্ট্রের বিজেপির জোট সরকার আদানি গোষ্ঠীকে বরাত দিয়েছিল। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ঘোষণা করেছেন, তিনি আদানি গোষ্ঠীর হাত থেকে প্রকল্পের বরাত ফিরিয়ে নেবেন।
ধারাভি পুনরুন্নয়ন প্রকল্পে ছয় লক্ষের বেশি বস্তিবাসী মানুষের জন্য নতুন ফ্ল্যাট তৈরি, ছোট কারখানা তৈরি করে তাঁদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত হবে। ওই এলাকায় মহারাষ্ট্র সরকার ও আদানি গোষ্ঠী আবাসন ও বাণিজ্যিক প্রকল্প গড়ে তুলবে। উদ্ধবের মুখে ওই প্রকল্প বাতিলের কথা শুনে তাঁর দল ভেঙে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা একনাথ শিন্দে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘মহাবিকাশ আঘাড়ী কি কোনও প্রকল্পে বাধা দেওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারে?’’
রাহুল গান্ধী লিখেছিলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কাজে লাগিয়ে ব্রিটিশরা ভারতের মুখ বন্ধ করেছিল। মহারাজা, নবাবদের ভয় দেখিয়ে, ঘুষ দিয়ে তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। এখন কিছু নতুন একচেটিয়া কারবারি সেই জায়গা নিয়েছেন। রাহুলের অভিযোগের পরে রাজঘরানা থেকে আসা বিজেপির জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, দিব্যা কুমারীরা রাহুলকে নিশানা করেন। কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল শিল্পপতিদের মোদী সরকারের প্রশংসা করতে বলছেন।
আজ রাহুল ঝাড়খণ্ডে প্রচারে গিয়ে ফের বলেছেন, ‘‘বিজেপি চায়, দু’তিন জন দেশটাকে চালাক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অম্বানী, আদানি। তাঁরা গোটা দেশের সম্পদ ১০-১৫ জন কোটিপতির হাতে তুলে দিতে চান। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কখনও কৃষক, দলিত, আদিবাসীদের ঋণ মকুব করেন না। কিন্তু ২৫ জন কোটিপতির ১৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করে দেন।’’