একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় এমনিতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এ বার নতুন করে আঙুল উঠল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। রবিবার রাতে ফিরোজাবাদের রামগড় এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত হলেন দুই পুলিশ কনস্টেবল।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কাল রাতে এক দল আততায়ীর পিছু ধাওয়া করেন দীনেশ প্রতাপ সিংহ ও গিরিরাজ কিশোর গুজ্জর নামে ওই দুই কনস্টেবল। তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, লুঠপাঠ চলছে রামগড় এলাকায়। খবর পেয়েই ছুটে যান দু’জনে। পুলিশ এসেছে জানতে পেরে তড়িঘড়ি পালায় দুষ্কৃতীরা। পিছনে ধাওয়া করেন দীনেশরা। পুলিশকে থামাতে গুলি চালাতে শুরু করে আততায়ীরা। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গিরিরাজের। দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। এ ঘটনার পর রামগড় থানার এসআই এবং এসও-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
উত্তরপ্রদেশে ‘জঙ্গলরাজ’ চলছে, বারবার এমন অভিযোগ তুলে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। শাসক দল সমাজবাদী পার্টি উল্টে বলেছিল, “বিজেপি-র ষড়যন্ত্রে মিডিয়া তাদের আক্রমণ করছে।” টানা ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ-আন্দোলন দেখেছিল লখনউ। সে বার জলকামান দিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেছিল পুলিশ-প্রশাসন। সপ্তাহ খানেক পর আজ ফের সেই দৃশ্য দেখল উত্তরপ্রদেশের আর এক শহর, ফিরোজাবাদ।
দুষ্কৃতীদের গুলিতে দুই কনস্টেবলের মৃত্যুকে ঘিরে আজ ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয় শহরের সুভাষ ক্রসিংয়ের সামনে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে আততায়ীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। পরিস্থিতি এক সময় হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়। ভাঙচুর করতে থাকেন স্থানীয় দোকানপাট। কাছেই একটি হাসপাতাল। বেশকিছু গাড়ি পার্ক করা ছিল। ক্ষুব্ধ মানুষ সেগুলোও ভাঙতে থাকে। অবস্থা সামলাতে গিয়ে ময়দানে নামে পুলিশ। উত্তেজিত জনতা তাতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পাথরের ঘায়ে জখম হয়েছেন পুলিশের ডিআইজি বিজয় সিংহ মিনাও।
এ দিনের ঘটনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান, উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্র। পরিস্থিতে সামলাতে ২০ লক্ষ টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করে অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, “কী ঘটেছে আমি জানি। ওই জেলাটাকেও আমি চিনি। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়েই ওঁদের মৃত্যু হয়েছে।”