কংগ্রেস বা জেডি(এস) বিধায়কদের ভাঙানোর মরিয়া খেলায় পেরে উঠল না বিজেপি। হার নিশ্চিত জেনে আস্থা ভোটেই গেলেন না ইয়েদুরাপ্পা। ইস্তফা দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে। সরকার গঠনের কংগ্রেস-জেডি(এস) জোটকে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জেডি(এস) নেতা কুমারস্বামী। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কে চন্দ্রশেখর রাও এবং অখিলেশ যাদবকেও। শপথগ্রহণের জন্য প্রথম সোমবার দিনটি নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু, সে দিন রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবাষির্কী। সে জন্য শপথ অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার শপথগ্রহণ করতে পারেন কুমারস্বামী।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ বিকেলেই আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। সকাল থেকেই এই আস্থা ভোট নিয়ে চলছিল টানটান উত্তেজনা। কংগ্রেস এবং জেডি(এস) নিজেদের বিধায়কদের একজোট করে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে রেথেছিল দু’দিন আগেই। আজ সকালেই দু’দলের বিধায়করা একজোট হয়েই বেঙ্গালুরুতে ফেরেন।
বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেও বিজেপি দাবি করছিল ১১২ জন বিধায়কের সমর্থন তারা নিশ্চিত করতে পেরেছে। যদিও বিধানসভার অধিবেশনের শুরু থেকেই দু’পক্ষের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে বিপরীত ছবি ধরা পড়ছিল। বিধানসভার গ্যালারিতে যখন গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গে, অশোক গহলৌতের মতো কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতাদের খোশ মেজাজে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে, তখন ইয়েদুরাপ্পা-সহ বিজেপি বিধায়কদের মুখ ছিল যথেষ্টই ম্লান।
বিধানসভায় ভাষণ দিতে উঠে ইয়েদুরাপ্পা বলেন, কর্নাটকের মানুষের রায় আমাদের দিকে ছিল। কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট হেরেছে এই নির্বাচনে। কিন্তু তার আগেই বিজেপি বুঝে গিয়েছিল আস্থা ভোটে জেতার সংখ্যা কোনও ভাবেই ‘কিনে ফেলা’ যায়নি। ফলে আস্থাভোটে হার নিশ্চিত বুঝে ইস্তফা দিয়ে দেন ইয়েদুরাপ্পা। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সোজা রাজভবনে চলে যান রাজ্যপাল বজুভাই বালার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিতে। ইয়েদুরাপ্পার ইস্তফা প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর জানান, গণতন্ত্রেকে সম্মান জানিয়েছেন তিনি।
কর্নাটকে শেষমেশ কংগ্রেস-জেডি(এস) জোটের জয় হল। এই জয়ে খুশি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি টুইট করেন, গণতন্ত্রের জয় হল। অভিনন্দন কর্নাটক। পাশাপাশি তিনি অভিনন্দন জানান, এইচ ডি দেবগৌড়া, কুমারস্বামীকেও।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দু’দিনের মাথাতেই ইয়েদুরাপ্পাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পরীক্ষায় নামতে হয়েছিল শনিবার। কিন্তু শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে রণে ভঙ্গ দেয় তারা। আস্থাভোটের আগে এ দিন সকাল থেকেই ছিল টানটান উত্তেজনা। আস্থাভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে ছবিটা একেবারে বদলে যায়। আরও একটা অডিও টেপ ‘ফাঁস’ করে হইচই ফেলে দেয় কংগ্রেস। কংগ্রেস দাবি করে, তাঁদের বিধায়ক বিসি পাতিলকে টেলিফোনে মন্ত্রিত্বের টোপ দিয়ে কিনতে চেয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। যদিও বিজেপি সেই দাবিকে সম্পূর্ণ নস্যাত্ করে।
শুধু অডিও টেপ প্রকাশই নয়, দুই বিধায়কের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার বিষয়টিও সামনে আনে কংগ্রেস। তারা দাবি করে, দুই বিধায়ক আনন্দ সিংহ এবং প্রতাপ গৌড়া পাতিল ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগের আঙুল ওঠে বিজেপির দিকেই। কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, তাদের কয়েক জন বিধায়ককে অপহরণ করেছিল বিজেপি।