ভোটে জিততে অনেক জায়গাতেই অন্য দলের হাত ধরতে হবে। আবার নিজেদের শক্তিও বাড়াতে হবে। উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনের ফলাফলে উভয় সঙ্কটে কংগ্রেস।
কোন পথে হাঁটবেন রাহুল গাঁধী? পথ খুঁজতে কাল থেকে বৈঠক বসছে দিল্লিতে। প্লেনারি অধিবেশন শনি-রবি। যেখানে রাহুল চান, অধিবেশন হোক কর্মীদের, সভাপতির নয়। আরও নতুন মুখ নজর কাড়ুক। লক্ষ্য, দলের শক্তি বাড়ানো। নিচুস্তর থেকে আরও নতুন মুখ তুলে আনা।
সভাপতি হিসেবে এটাই চাইছেন রাহুল। মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে। যেখানে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির খসড়া তৈরি হচ্ছে। দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘ব্র্যান্ড মোদীর ক্ষয় হচ্ছে। আর সেখানে বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দলকে এক সঙ্গে আসতেই হবে। কংগ্রেস নিজেদের শক্তি নিয়ে যেমন আলোচনা করবে, তেমনই দুর্বলতা নিয়েও কথা হবে।’’
সদ্য গত কাল উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনের ফল দেখিয়েছে, মায়া-অখিলেশ এক হয়ে গো-হারান হারিয়েছেন মোদী-যোগীকে। কংগ্রেস তাতে ‘হাত’ বাড়ায়নি। ফলে জয়ের শরিকও হতে পারেনি। তবে ফল দেখে রাহুল কবুল করেছেন, বিজেপি-বিরোধী ভোট শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ঝুলিতেই যাবে। আর উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে দাঁড় করানোর কাজটি রাতারাতি হবে না।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাহুলের সামনে উভয়সঙ্কট এটাই। একদিকে দলের সংগঠন মজবুত করতেই হবে। অন্য আঞ্চলিক দলের কাছে মাথা নত করলে তা হবে না। আসন ও ভোট শতাংশ দুটোতেই মার খাবে কংগ্রেস। আবার এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে হাত মেলানো ছাড়া উপায়ও নেই। কিন্তু সেটা করতে গেলে ক্ষিপ্ত হচ্ছেন রাজ্য কংগ্রেস নেতারা। যেমন হয়েছে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে। একটি রাজ্যসভা আসনে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতায় চটেছেন অধীর চৌধুরীরা।
এর সঙ্গেই যোগ হয়েছে জাতীয় স্তরে জোট গড়ার পদে নানা বাধা। কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়াররা এখনও রাহুলের নেতৃত্বে স্বচ্ছন্দ নন। পওয়ারের মতো নেতা চান, কংগ্রেসের বদলে অন্য কোনও আঞ্চলিক দল জোটের নেতৃত্বে আসুক। আবার সনিয়া চান, রাহুলের নেতৃত্বেই জোট হোক। তার উপর রয়েছে কংগ্রেসের প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব। প্রবীণরা চান, সনিয়াই কান্ডারি থাকুন। রাহুল চান, উঠে আসুক আরও নতুন মুখ। সে কারণে প্লেনারিতেও যুবদেরই ঠাঁই দিতে চাইছেন। নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতেও ভোল বদলাবে সেই অনুপাতে।
ঘরে-বাইরে এই সঙ্কটের মধ্যেই পথ খোঁজা শুরু রাহুলের।