আজ, ১১ মে, বৃহস্পতিবার থেকেই সুপ্রিম কোর্টে শুরু হল তিন তালাক মামলার ঐতিহাসিক শুনানি। প্রধান বিচারপতি জেএস খেহরের নেতৃত্বে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পাঁচ বিচারকের বেঞ্চে শুরু হল এই শুনানি। এই বেঞ্চে বিচারপতি খেহর ছাড়াও রয়েছেন, কুরিয়ান জোসেফ, আইএফ নারিম্যান, ইউইউ ললিত এবং আব্দুল নাজির।
গত বছরের শুরুতে দেশের বেশ কয়েকটি মুসলিম মহিলা সংগঠন তিন তালাক বাতিলের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। কেন্দ্রীয় সরকারও এই দাবির পক্ষে দাঁড়ায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একাধিক জনসভায় ‘তিন তালাক’ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে বিচারপতি খেহর জানান, মুসলিম ধর্মে তিন তালাক মৌলিক বিষয়গুলির আওতায় আদৌ পড়ে কি না তার সমস্ত দিক বিবেচনা করে দেখবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে ‘তিন তালাক’ নিয়ে এই মামলার সঙ্গে মুসলিম পুরুষদের বহু বিবাহের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও স্পষ্ট করে দেন খেহর।
আরও পড়ুন: শাপমুক্তির অপেক্ষায় শীর্ষ আদালতের দিকে তাকিয়ে দেশের মুসলিম মেয়েরা
তিন তালাক বিলোপের দাবিতে প্রতিবাদ
মামলা চলাকালীন দুই পক্ষই সওয়াল করার জন্য দু’দিন করে সময় পাবে। এবং একদিন করে সময় পাবে অপর পক্ষের যুক্তি খণ্ডন করার জন্য। তবে কোনও বক্তব্য একাধিকবার পেশ করা যাবে না। এবং শুধুমাত্র ‘তিন তালাক’-এর উপরেই শুনানি হবে।
তবে মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড এবং বেশ কিছু গোঁড়া ধর্মীয় সংগঠন প্রথম থেকেই এই প্রথা বিলোপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। বাইরে থেকে অন্য কেউ তাঁদের ধর্ম বিশ্বাসে নাক গলালে সেটা যে মেনে নেওয়া হবে না তাও জানানো হয়েছিল ল’বোর্ডের তরফে। তবে সম্প্রতি কিছুটা সুর নরম করে তারা জানিয়েছিল, এই প্রথার অপব্যবহার হলে তারা তা মানবে না।
মুসলিম ধর্মের ‘তিন তালাক’ প্রথার বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরেই মুসলিম মহিলা সংগঠনগুলি ল’ বোর্ডের বার্ষিক সম্মেলনে শরিয়তি আইনের সংস্কার চেয়ে দাবিপত্র পেশ করে চলেছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়েও পরের অধিবেশনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মহিলাদের পুরুষের সমান অধিকার দেওয়া যাবে না। ‘তিন তালাক’ প্রথার বিলোপ সাধনের দাবি উঠলেও সে দাবিতে কর্ণপাত করেনি ল’বোর্ড।