জোসনুর দায়ারা।
যিনি বাবা, মা-ও হবেন তিনিই। এমন ইচ্ছেই মনে বইছেন গুজরাতের এক রূপান্তরকামী চিকিৎসক। ২৫ বছরের চিকিৎসক জেসনুর দায়ারা খুব শীঘ্রই লিঙ্গ বদলের অস্ত্রোপচার করাবেন। তবে পুরুষ থেকে নারী হওয়ার আগে তিনি সংগ্রহ করে রাখলেন তাঁর শুক্রাণু। তাঁর আশা, ভবিষ্যতে একজন পূর্ণাঙ্গ নারী হয়ে যখন মা হবেন তিনি, তখন নিজেরই শুক্রাণু ব্যবহার করবেন। একই সঙ্গে সন্তানের বাবা ও মা হওয়ার বিরল ঘটনার সাক্ষী হবেন তিনি।
বিষয়টি চিকিৎসা বিজ্ঞানে আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। জানা গিয়েছে, বিষয়টি একেবারে অসম্ভব নয়। তবে নিজেরই শুক্রাণু ব্যবহার করে মা হতে চাইলে, জেসনুর সন্তানকে নিজের গর্ভে পালন করতে পারবেন না। তাঁকে ধারণ করতে ‘অন্য’ মায়ের দ্বারস্থ হতে হবে। শুধু তা-ই নয় নিজের ডিম্বাণুও ব্যবহার করতে পারবেন না ওই চিকিৎসক। সে ক্ষেত্রেও তাঁকে ‘ডোনর’-এর সাহায্য নিতে হবে।
অবশ্য এত শর্ত সত্ত্বেও পিছিয়ে আসার পাত্র নন জেসনুর। তরুণ চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘মা’ হওয়া মানে শুধু শিশুকে গর্ভে ধারণ করা নয়। তাঁর কথায়, ‘‘মা গর্ভে নয়, মন থেকে হতে হয়।’’
পুরুষ শরীরে জন্মালেও একটু বড় হতেই নিজেকে অস্বাভাবিক লাগতে শুরু করেছিল জেসনুরের। ‘‘পুরুষ শরীরে আটকে থাকা নারী মনে হত নিজেকে। আমার মা-দিদিদের মতো শাড়ি পরার, ওষ্ঠরঞ্জনী লাগানোর প্রবল ইচ্ছে হতে,’’— অনেক কষ্টে নিজেকে আটকে রাখতেন লুকিয়ে রাখতেন জেসনুর। গুজরাতের পাঁচমহলের গোধরার বাসিন্দা তিনি। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে ফিরেছেন। জেসনুর জানিয়েছেন, বিদেশে পড়াশোনা করতে যাওয়া তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। শরীরে তিনি এখনও নারী না হলেও নারী হিসেবেই জীবনধারণ করেন। শিক্ষাই এই সাহস আর আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে তাঁকে।
এ বছরের শেষেই ভারতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিলের পরীক্ষায় বসার কথা তাঁর। সেই পরীক্ষার পরই লিঙ্গবদলের অস্ত্রোপচার করাবেন জেসনুর। জানিয়েছেন সন্তানের জন্য ধারণ মায়ের দ্বারস্থ হতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। অস্ত্রোপচারের পরই এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করবেন তিনি।