সুদিনে: রামরহিম ও তাঁর দত্তক কন্যা হানিপ্রীত। —ফাইল চিত্র।
ডেরা প্রধান গুরমিত রাম রহিমের সিংহের বিরুদ্ধে জোড়া খুনের মামলার শুনানি আজ শনিবার। তার আগে, অশান্তির আশঙ্কায় নিরাপত্তা ফের আঁটোসাটো করা হয়েছে হরিয়ানার পঞ্চকুলায়।
ধর্ষণের মামলায় গুরমিত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে পঞ্চকুলা ও সিরসায় ডেরা ভক্তদের তাণ্ডবের বলি হন ৩৮ জন। গত মাসের সেই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য এ বার শুরু থেকেই সতর্ক থাকছে হরিয়ানা সরকার। ডেরায় দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের পাশাপাশি সিরসার সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি ও ডেরার প্রাক্তন ম্যানেজার রঞ্জিৎ সিংহকে খুনের অভিযোগেও মামলা চলছে গুরমিতের বিরুদ্ধে। শনিবার সিবিআইয়ের বিশেষ বিচারক জগদীপ সিংহের এজলাসে সেই মামলার শুনানি। হরিয়ানা পুলিশের ডিজি বিএস সাঁধু জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই আদালত চত্বরে প্রচুর আধাসেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে শহর-লাগোয়া এলাকাতেও। যদিও আগামী কাল আদালতে সশরীরে উপস্থিত থাকবে না গুরমিত। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোহতকের সুনারিয়া জেল থেকে চলবে শুনানি। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণ মামলার রায়ের আগে যে ভাবে পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে লাখ লাখ ডেরা-ভক্ত পঞ্চকুলায় এসে ভি়ড় জমিয়েছিল, এ বার তা হয়নি।
আরও পড়ুন: জেলে মাকে দেখেই গুরমিতের প্রশ্ন, ডেরা ঠিক চলছে তো
২০০২ সালে খুন হন ‘পুরা সচ’ পত্রিকার সম্পাদক রামচন্দ্র ছত্রপতি। ওই একই বছর খুন হন ডেরার প্রাক্তন ম্যানেজার রঞ্জিৎ সিংহও। এই জোড়া খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। ২০০৭ সালে চার্জশিট দেয় সিবিআই। তাতে নাম ছিল গুরমিতের। ডেরা প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা এগোলেও এখনও সন্ধান নেই তার দত্তক কন্যা হানিপ্রীতের। পুলিশ শুধু রাজস্থান থেকে তাঁর গাড়িচালককে ধরতে পেরেছে। কিন্তু নেপাল সীমান্তে হানা দিয়ে, লুক-আউট নোটিস জারি করেও হানিপ্রীতকে ধরা যায়নি। ইতিমধ্যে হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রী রামবিলাস শর্মা আজ জানান, গত ১৫ অগস্ট ডেরার জন্য তিনি যে ৫১ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেছিলেন, তা ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গুরমিত জেলে যাওয়ার পরে বিপাকে স্বঘোষিত অন্য গুরুরা। ইতিমধ্যেই ১৪ জন ‘জাল সাধু’র নাম ঘোষণা করেছে অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদ। সেই তালিকায় রয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত আসারাম বাপুর নামও। ২০১৩ থেকে জেলে রয়েছে সে। গত কাল ধর্ষণ মামলার শুনানিতে আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময়ে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে খেপে ওঠে আসারাম। এক সাংবাদিক জানতে চান, আসারাম নিজেকে কোনও দলে ফেলে? জবাবে আসারাম বলে, ‘‘সাধু নই, আমি গাধা শ্রেণির।’’