সংসদে সুরই চড়াবে তৃণমূল

বিধানসভা ভবনে সোমবার তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওদের ছেড়ে কথা বলব না। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি করে ওরা যদি আমাদের সবাইকে জেলে ভরে দেয়, তা হলেও মাথা নত করব না। আমরা বাঘের বাচ্চা! কাউকে ভয় পাই না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৭
Share:

সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব পশ্চিমবঙ্গ। এ বার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করে রাজ্য তার প্রতিবাদ জানাবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দলীয় সাংসদদেরও আক্রমণাত্মক হওয়ার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বিধানসভা ভবনে সোমবার তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওদের ছেড়ে কথা বলব না। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি করে ওরা যদি আমাদের সবাইকে জেলে ভরে দেয়, তা হলেও মাথা নত করব না। আমরা বাঘের বাচ্চা! কাউকে ভয় পাই না।’’ গো-রক্ষকদের তাণ্ডব সামলাতে রাজ্য সরকারগুলিকে যে উদ্যোগী হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী, তা নিয়েও এ দিন পাল্টা মুখ খুলেছেন মমতা। বিরোধীদের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় করেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে সরব হওয়ার নির্দেশ দিয়ে তৃণমূল নেত্রী পরে বলেন, ‘‘গরুর নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে ওরা। একটা গরুর নামে দু’টো করে মানুষ মারছে। অথচ কেন্দ্র বলছে, রাজ্য দেখে নিক। আগে তোমরা নিজেদের হনুমান সামলাও! তার পরে রাজ্যকে বলবে!’’

সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে সংসদের অধিবেশন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের দু’তিন জন ছাড়া বাকি সাংসদেরা কলকাতায় বিধানসভাতেই ভোট দেন। সেখানেই সাংসদদের সঙ্গে বসে অধিবেশনের রণকৌশল ঠিক করে দেন মমতা। সাংসদদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, জিএসটি, দার্জিলিং, বসিরহাটের মতো বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি বাধানোর চেষ্টা, গো-রক্ষার নামে তাণ্ডবের প্রতিবাদ জানাতে হবে।

Advertisement

আজ, মঙ্গলবার এবং কাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে আধার কার্ড নিয়ে মামলার শুনানি। আয়কর রিটার্ন এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানাচ্ছে এ রাজ্য। তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সেই মামলায় সওয়াল করবেন। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘‘গোপনীয়তা মানুষের মৌলিক অধিকার কি না, সে প্রশ্নের জবাব আগে স্পষ্ট করুক সুপ্রিম কোর্ট।’’ রাজ্য মনে করে, আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার ওই সিদ্ধান্ত ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার খর্ব করার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

দার্জিলিং, বসিরহাট-কাণ্ডের পিছনে বিজেপির উস্কানি রয়েছে বলে বারবারই মমতা ও তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করছেন। পাহাড়ের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্র সহযোগিতা করছে না এবং নেপাল, বাংলাদেশ, ভূটান, চিনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে ফেলছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় কেন্দ্রের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্য ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ ‘স্যান্ডউইচ’ হয়ে যাচ্ছে! নোট-বাতিলের জেরে যে এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ ভুক্তভোগী, সে প্রসঙ্গ সংসদে তুলতে বলেছেন মমতা। দলীয় সূত্রের খবর, ফসল বিক্রি করে চাষিরা যে দাম পাচ্ছেন না, তার জন্যও বিজেপি সরকারকে দায়ী করবে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement