তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র।
ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের আহ্বানে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে বৈঠকে গরহাজির থাকছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্য প্রায় সব বিরোধী দলের নেতানেত্রী এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা শনিবার স্ট্যালিনের বৈঠকে যাচ্ছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে যাচ্ছেন না। তৃণমূলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতা বা সাংসদকেও স্ট্যালিনের বৈঠকে পাঠানো হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, তৃণমূল সংসদে এ বিষয়ে ডিএমকে-র প্রতিবাদ, কক্ষত্যাগেও যোগ দেয়নি।
নতুন জনগণনা করে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলির লোকসভা আসন উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির তুলনায় কমে যাবে, এই আশঙ্কায় স্ট্যালিনের নেতৃত্বে ডিএমকে সরব। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশারও আসন কমে যাওয়ার কথা। স্ট্যালিন এ বিষয়ে যৌথ অ্যাকশন কমিটি তৈরি করে শনিবার চেন্নাইয়ে তার প্রথম বৈঠক ডেকেছেন। আজ স্ট্যালিন বলেছেন, ‘‘এটি নিছক বৈঠক নয়। এক আন্দোলনের সূচনা, যা দেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। আমরা একসঙ্গে ন্যায্য পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্য পূরণ করব।’’ তৃণমূল সূত্রের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, অসম, এমনকি তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে যেখানে বিধানসভা ভোট আসন্ন, সেখানে ভোটের সঙ্গে আসন পুনর্বিন্যাসের সম্পর্ক নেই। বিধানসভা ভোটের আগে আসন পুনর্বিন্যাস হচ্ছেও না। তার বদলে ভোটার কার্ডে কারচুপি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা ছাড়া, তৃণমূল ডিএমকের জোট শরিক নয়। স্ট্যালিনের ডাকে যোগ দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
আজ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে মন্তব্য না করলেও ভাষা নিয়ে ডিএমকে-র বিরুদ্ধে নাম না করে বিভাজনের বিষ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। স্ট্যালিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ‘‘মোদী সরকারের সরকারি ভাষা দফতর সব ভাষার ব্যবহার ও অনুবাদ বাড়াতে ভারতীয় ভাষা বিভাগ তৈরি করেছে। ডিসেম্বরের পর থেকে আমি মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, অন্য মন্ত্রীদের তাঁদের ভাষায় চিঠি লিখব।’’ স্ট্যালিন দক্ষিণের কেরল, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, পঞ্জাবের বিজেপি বিরোধী দলের প্রধানদের চিঠি লিখে তাঁর যৌথ অ্যাকশন কমিটিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। কেরলের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, পঞ্জাবের আম আদমি পার্টির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, তেলঙ্গানার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির বৈঠকে থাকার কথা। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী, এনডিএ-র শরিক চন্দ্রবাবু নায়ডু কী করবেন, স্পষ্ট নয়। বিজু জনতা দলের নবীন পট্টনায়ক দুই প্রতিনিধিকে পাঠাচ্ছেন।
বিজেপির অভিযোগ, আগামী বছর তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন নিজের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে সরব। তাঁরা উত্তর ভারতকে অপমান করছেন। শাহ আজ বলেন, ‘‘ভাষার নামে যাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করছেন, তাঁরা নিজের দুর্নীতি ঢাকার চেষ্টা করছেন। আমি দক্ষিণ ভারতের ভাষার বিরোধিতা করছি না। তামিলনাড়ু সরকার তামিলে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ্যক্রম চালু করেনি। তামিলনাড়ুতে এনডিএ সরকার এলে তা করবে।”