বৈঠকি: তৃণমূল ভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
সংসদে কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ে যাবে না তৃণমূল। কংগ্রেস যদি সংসদ অচল করতে চায়, তৃণমূল তাতে শরিক হবে না।
শুক্রবার দলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, তৃণমূল তার নিজস্ব কর্মসূচি অনুযায়ী সংসদে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ জানাবে। আলোচনা দাবি করবে। তবে কোনও অবস্থাতেই অধিবেশন বানচাল করার পথে যাবে না।
পশ্চিমবঙ্গে আগামী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল যে একাই চলতে চায়, তেমন ইঙ্গিত এর আগেই দিয়ে রেখেছেন নেত্রী। এই রাজ্যে কংগ্রেস এখনও প্রকাশ্যে মমতার বিরোধিতায় সরব। গুজরাতে নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফলের যে ইঙ্গিত মিলেছে, তাতেও কংগ্রেসের হাল খুব ভাল নয়। এই অবস্থায় লোকসভার প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসকে সামনে রেখে তাদের সঙ্গে এখনই ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি নিতে মমতা স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না। অনেকের মতে, সংসদে একলা চলার ঘোষণা তারই প্রতিফলন।
সংসদে তৃণমূলের রণকৌশল স্থির করার জন্য এ দিনের বৈঠক থেকে ছ’জনের একটি কমিটি তৈরি করে দেন। তাতে আছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, সৌগত রায় এবং দীনেশ ত্রিবেদী। উল্লেখযোগ্য ভাবে এ দিনের বৈঠকে কিছুটা গুরুত্ব পান ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশ। তাঁর কাছে মমতা সংসদের হাল হকিকৎ জানতে চান। মুকুল রায়ের ‘খাসতালুক’ কাঁচড়াপাড়া ব্যারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত। দীনেশ গুজরাতি। তাঁকে সরিয়ে মুকুলকে রেলমন্ত্রী করেছিলেন মমতা। সব মিলিয়ে দীনেশের ‘গুরুত্ববৃদ্ধি’ তাৎপর্যপূর্ণ বলে দলের অন্দরে অনেকের ধারণা।
এ দিন থেকেই সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। সংসদীয় রণকৌশল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা নেত্রীকে জানাতে হবে বলে সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন। টুইটার বা ফেসবুকে নিজের ইচ্ছেমতো কোনও ‘সিদ্ধান্ত’ ঘোষণাও যে তিনি বরদাস্ত করবেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। টুইটার-ফেসবুকে সবচেয়ে সক্রিয় ডেরেক।
আগামী সোমবার থেকে অধিবেশনে এফআরডিআই বিলের প্রবল বিরোধিতায় তৃণমূলকে অংশ নিতে বলেছেন মমতা। এই বিল প্রত্যাহারের জন্য সংসদের ভিতরে-বাইরে আন্দোলনে সামিল হতে বলেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। বৈঠকের পরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কালা বিল প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি আমরা। বিল প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে আমরা আন্দোলন করব।’’ এ ছাড়াও, জিএসটি, নোটবন্দি, আধারের সঙ্গে মোবাইল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগ নিয়ে আপত্তি নিয়েও তৃণমূলকে সরব হতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।