Narendra Modi

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সংসদ অবমাননা হয়েছে, নতুন ভবন উদ্বোধনের আগে ছয় তির তৃণমূলের

তৃণমূলের দাবি, ভারতের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ভবনের (সংসদ) ভিতরে মোদীর জমানায় (২০১৪-২৩) এমন অনেক ‘সন্দেহজনক’ কাজ হয়েছে, যা এর আগে স্বাধীন ভারতে ঘটেনি।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ০৬:৪৭
Share:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তির নিক্ষেপ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। ফাইল চিত্র।

রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত সবার আগে ঘোষণা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। অনুষ্ঠানের বাহাত্তর ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব আধ ডজন তির নিক্ষেপ করলেন। তৃণমূলের দাবি, ভারতের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ভবনের (সংসদ) ভিতরে মোদীর জমানায় (২০১৪-২৩) এমন অনেক ‘সন্দেহজনক’ কাজ হয়েছে, যা এর আগে স্বাধীন ভারতে ঘটেনি।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আজ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর কথায়, “সংসদ তো নিছক একটা ভবন নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা পুরনো ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নিয়মকানুন মিলে গড়ে উঠেছে। ভারতের গণতন্ত্রের ভিত্তিভূমি সংসদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেটা বোঝেন না। যদি বুঝতেন তা হলে কেনই বা তিনি গত ন’বছর ধরে সংসদের অবমাননা করতেন?” এর পরই ডেরেক ছ’টি উদাহরণ তুলে দাবি করেন যে, মোদী আসার আগে এমন অনিয়ম সংসদের ইতিহাসে কখনও হয়নি।

২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে স্বপন দাশগুপ্ত তারকেশ্বর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে হেরে যান। তার আগে তিনি রাজ্যসভায় মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। বিধানসভায় হেরে যাওয়ার পরে এক মাসের মাথায় ফের সংসদের উচ্চ কক্ষের মনোনীত সদস্য হয়েছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্যসভায় মোট ১২ জনকে মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি। ডেরেক আজ নাম না-করে জানিয়েছেন, “এই প্রথম বার এক ব্যক্তি একই মেয়াদকালে দু’বার নির্বাচিত হলেন। এই ঘটনা অভূতপূর্ব।”

Advertisement

মমতার অভিযোগ

• সাংসদদের ভোটাভুটির আবেদনে কর্ণপাত না করা

• রাজ্যসভায় মনোনীত প্রার্থী বিধানসভায় হারের পর ফের মনোনয়ন

• সরকারি পক্ষের হট্টগোলে অধিবেশন অচল

• লোকসভা ডেপুটি স্পিকারহীন

• অর্থ বিলের সঙ্গে অন্য বিষয় পাশ করিয়ে নেওয়া

• পৃথক রেল বাজেট বন্ধ করে দেওয়া

তৃণমূলের পক্ষ থেকে নতুন ভবন উদ্বোধনের ঠিক আগে তুলে আনা হয়েছে ২০২০ সালে ধ্বনি ভোটে কৃষি আইন রাজ্যসভায় পাশ করানোর প্রসঙ্গ। ডেরেকের কথায়, “অনেক সাংসদই সে দিন ভোটাভুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু সমস্ত কানুনকে অগ্রাহ্য করে, অতীতের উদাহরণ অগ্রাহ্য করে সেই আবেদন মে‌নে নেওয়া হয়নি। অথচ সংসদীয় আইন অনুযায়ী যদি এক জন সাংসদও বিল পাশের সময়ে নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ভোটাভুটির দাবি করেন, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বা লোকসভার স্পিকারকে বিষয়টি নিয়ে ভোট করাতে হয়।”

এই বছরের বাজেট অধিবেশন কার্যত আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, ২০০৪-০৫ এবং ২০১৩-১৪তেও এমন ঘটেছে, এটা ঠিক। কিন্তু এ বারের সঙ্গে একটা বিরাট তফাৎ রয়েছে। সে সময়ে এক বার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়েছিল, অন্য বার বিষয় উপদেষ্টা কমিটি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনগুলির কথা মাথায় রেখে। বিরোধী পক্ষ নয় এ বারে খোদ সরকারি পক্ষই রাজ্যসভায় এমন হট্টগোল করে গেল, যে বাজেট অধিবেশন ধুয়ে মুছে সাফ। এমনটা কখনও হয়নি।

তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, মোদী জমানাতেই অর্থ বিলে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে সম্পর্ক বহির্ভূত নানা বিষয় ঢোকাতে শুরু করে। অর্থ বিল যে হেতু পুনর্বিবেচনার জন্য কোনও সংসদীয় কমিটিতে যায় না, তাই কেন্দ্র কৌশল করে সেখানে অন্য বিল নিয়ে এসে পাশ করাচ্ছে। যেমন ২০১৬ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ১৯৩৪ সালের আইন সংশোধনীর বিষয়টি ঢোকানো হয়েছিল অর্থ বিলে।

পাশাপাশি বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা না-করে পৃথক রেল বাজেট তুলে দেওয়া, লোকসভায় কোনও ডেপুটি স্পিকার না-থাকার বিষয়গুলিও উল্লেখ করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement