(বাঁ দিকে) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের কথা কাটাকাটিতে তুলকালাম হল লোকসভায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত লোকসভা অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে হয়। জ্যোতিরাদিত্যের উদ্দেশে কল্যাণের বিবিধ বাক্যবাণের মধ্যে একটি শব্দ নিয়েই হইচই বাধে লোকসভায়। পরে স্পিকার ওম বিড়লা মহিলাদের জড়িয়ে বলা ওই শব্দটি লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়ে দেন। তবে জ্যোতিরাদিত্যের উদ্দেশে দুঃখপ্রকাশও করেছেন কল্যাণ। যদিও জ্যোতিরাদিত্য স্পষ্টই জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমা করছেন না। পরে বিজেপির মহিলা সাংসদেরা কল্যাণের বরখাস্তের দাবিতে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে দেখা করেন।
নিজের বক্তৃতায় কোভিড পর্বে রাজ্য সরকারের ভূমিকাকে মহিমান্বিত করছিলেন কল্যাণ। তৃণমূল সাংসদকে এ-ও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করেনি। সেই সময়ে যা করেছিল, তা রাজ্য সরকারই করেছিল। অথচ প্রচার হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সব করেছেন বলে।’’ এর পাল্টা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘‘যে সময়ে কোভিড চলছিল, সেই সময়ে মনে হয় কল্যাণ ঘুমোচ্ছিলেন।’’
এর পরেই শুরু হয় বাদানুবাদ। কল্যাণ বলতে থাকেন, বাংলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কিচ্ছু করেনি। কল্যাণের গলার জোরের সঙ্গে নিত্যানন্দ পেরে উঠছিলেন না। তার পর দেখা যায় জ্যোতিরাদিত্য বলতে দাঁড়ান। সেই সময়েই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেওয়া জ্যোতিরাদিত্যের উদ্দেশে কল্যাণ বলেন, ‘‘আপনাকে দেখতে সুন্দর। কিন্তু, আপনি একজন খলনায়ক। আপনি রাজ পরিবারের বলে অন্যদের ছোট করবেন না।’’ এই সময়েই মহিলাদের জড়িয়ে জ্যোতিরাদিত্যকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল সাংসদ।
পাল্টা জ্যোতিরাদিত্য কল্যাণের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন সভায়। আমার নাম জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আপনি আমার পরিবারের বিরুদ্ধে বাজে কথা বললে সহ্য করব না।’’ সেই সময়েই কল্যাণ সকলের সামনে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু, ক্রুদ্ধ শিন্ডে তাঁকে ক্ষমা করতে অস্বীকার করেন।
বিজেপির মহিলা সাংসদদের বক্তব্য, কল্যাণ যা বলেছেন, তা মহিলা সাংসদদের অপমান। রিজিজুর কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন যেন তিনি স্পিকারের কাছে চলতি অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য কল্যাণকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেন।