ফাইল চিত্র।
বিজেপিকে সরাতে আগে প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে ওঠাই তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য বলে জানালেন সুস্মিতা দেব। বললেন, “বিজেপিকে হটাতে দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দেশ জুড়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।” কী সেই পরিকল্পনা, তার কিছুটা আজ শিলচরে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনে এসে প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন সুস্মিতা। কংগ্রেসকে তাঁর নতুন দল দুর্বল করছে বলে যে অভিযোগ সাম্প্রতিক কালে তোলা হয়েছে, তা খণ্ডন করে তিনি জানান, তৃণমূল বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপিকেই প্রধান শত্রু বলে মনে করছে। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি থেকে বিজেপিকে হটাতে আর নতুন করে তাদের কোথাও জমি পাওয়া রুখতে তাই তাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন। সুস্মিতার বক্তব্য, বিজেপিকে সরাতে হলে প্রথমে তৃণমূলকেই প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠতে হবে। যে সব জায়গায় কংগ্রেস মৃতপ্রায়, ঘাসফুলকে সেখানে গিয়ে পূর্ণশক্তিতে থাবা বসাতে হবে। এবং সেই লক্ষ্যেই মেঘালয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠা বা গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে এত জোর দিয়েছে দল। তাঁর মতে, কংগ্রেসের পক্ষে ওই সব জায়গায় বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানানো সম্ভব ছিল না। মেঘালয় বা গোয়ায় তৃণমূল না গেলে গেরুয়া দাপট বেড়েই চলত।
জোট গঠনেও যে তাঁরা একই হিসাব মাথায় রাখেন, তা-ও জানালেন তৃণমূল সাংসদ। উদাহরণ হিসাবে গোয়ার কথা তোলেন সুস্মিতা। তৃণমূল সেখানে এমজিপি-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। নিশ্চিত ভাবে জিততে পারবে, এমন ১৩টি আসনই ছাড়া হয়েছে ওই দলকে। ওই সব আসন অন্যদের দেওয়া হলে হয়তো বিজেপিরই সুবিধে হত।
সুস্মিতা জানান, মেঘালয়ের পরে এ বার তাঁরা অসমেও প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে উঠতে চান। এপ্রিলে রাজ্যসভার নির্বাচন রয়েছে। আপাতত সে দিকেই নজর তৃণমূলের। ওই নির্বাচনে তাঁরা প্রার্থী দিচ্ছেন না বটে, তবে এর পরই অসমের রাজনীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আসছে। তখন তাঁরা অসমে পুরোদস্তুর সংগঠন বিস্তারে মনোযোগ দেবেন।
আজ নিজের শহরে তৃণমূলের অফিসঘরের উদ্বোধন করলেন সুস্মিতা। তাঁর বাবা সন্তোষমোহন দেব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার সময়ে শিলচরে মনের মতো করে কংগ্রেস অফিস বানিয়েছিলেন। গত অগস্টে মমতার হাত ধরার আগে পর্যন্ত সেখানেই বসতেন সুস্মিতা। এ বার সেই অফিসের ঢিল ছোড়া দূরত্বে নতুন ঠিকানা হল তাঁর। এটিই কি তবে রাজ্য দফতর? উত্তর-পূর্বে ঘাসফুলের সংগঠন বিস্তারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রীর জবাব, “না, তৃণমূলের প্রদেশ দফতর গুয়াহাটিতেই হবে। সে জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে।” অসমিয়া কাউকে প্রদেশ সভাপতি বাছা হবে— এমন ইঙ্গিত দিলেও সুস্মিতার স্পষ্ট বক্তব্য, “আমরা সাম্প্রদায়িকতায় নয়, সমন্বয়ে বিশ্বাসী। গোয়ার ফল প্রকাশের পরেই অসমে প্রদেশ কমিটি গঠন করা হবে। তৃণমূলের কমিটি হবে উত্তর-পূর্বের প্রতিটি রাজ্যে।” পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর-পূর্বে সংগঠন বিস্তারে খুবই আগ্রহী। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি গোয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকায়, এই দিকে খুব বেশি নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বার সবাই মিলে উত্তর-পূর্বে ঝাঁপাবেন৷