Revanth Reddy

রেবন্তের শপথে গুরুত্ব, তৃণমূলকে বার্তা কংগ্রেসের

মমতা এই মাসেই দিল্লি যাচ্ছেন। ইন্ডিয়ার বৈঠকেও তিনি যোগ দেবেন। আপাতত সব মিলিয়ে গো-বলয়ের তিন রাজ্যে পরাজয়ের পরে ইন্ডিয়া পরিবারকে ফের ঐক্যবদ্ধ করার মরিয়া চেষ্টা দেখা যাচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৯
Share:

তেলঙ্গানার নয়া মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। ছবি: পিটিআই।

চলতি মাসের ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে নয়াদিল্লিতে বসতে চলেছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শীর্ষ নেতাদের বৈঠক। তার পরের বৈঠকটি বসবে জানুয়ারিতে। এর আগে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মধুর বার্তা দেওয়া হল তৃণমূল-সহ প্রধান শরিকদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জবাবে নরম পাল্টা বার্তা দিলেন। আজ ভোরে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া সনিয়া গান্ধীর হায়দরাবাদগামী বিশেষ বিমানে চড়লেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। ওই বিমানে ছিলেন গান্ধী পরিবার ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।

Advertisement

মমতা এই মাসেই দিল্লি যাচ্ছেন। ইন্ডিয়ার বৈঠকেও তিনি যোগ দেবেন। আপাতত সব মিলিয়ে গো-বলয়ের তিন রাজ্যে পরাজয়ের পরে ইন্ডিয়া পরিবারকে ফের ঐক্যবদ্ধ করার মরিয়া চেষ্টা দেখা যাচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। সূত্রের খবর, আসন্ন বৈঠকে আসন সমঝোতাই যাতে এক ও একমাত্র কর্মসূচি থাকে, সে জন্য কংগ্রেসকে বার বার করে বোঝানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। বলা হয়েছে, আসন সমঝোতার পালা চুকলে তার পরে রাজনৈতিক প্রচারের ভাষ্য স্থির করা হবে।

গত কালই রেবন্ত রেড্ডি ফোন করে তাঁর শপথে থাকার জন্য মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মমতা জানান, তিনি না যেতে পারলেও, পাঠাবেন ডেরেককে। আজ সকালে সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে একই চার্টার্ড ফ্লাইটে সঙ্গী হয়েছেন ডেরেক। শুধু তাই-ই নয়, মমতার প্রতিনিধিকে গুরুত্ব দিতে রেবন্ত রেড্ডির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে কংগ্রেসের দুই মুখ্যমন্ত্রী (হিমাচল এবং কর্নাটক), গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ছাড়াও ছিলেন ডেরেক। ইন্ডিয়ার আর কোনও নেতাকে মঞ্চে দেখা যায়নি।

Advertisement

তবে কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সমস্ত অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকেই। তাঁরা কেউই এত কম সময়ের নোটিসে আসতে পারেননি। কংগ্রেসের শরিক ডিএমকের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন তামিলনাড়ুর বন্যা পরিস্থিতির জন্য স্বাভাবিক ভাবেই উপস্থিত থাকতে পারেননি। আসতে পারেননি হেমন্ত সোরেন, নীতীশ কুমাররাও। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও আসেননি। যদিও এঁদের সবাইকেই নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল কংগ্রেস। ছিলেন সিপিআই (যাদের এক জন বিধায়ক রয়েছে তেলঙ্গানায়)-এর ডি রাজা এবং জেএমএম-এর সাংসদ মহুয়া মাঝি।

আজ রেবন্তের শপথ উপলক্ষে হায়দরাবাদের এল বি স্টেডিয়ামের বাইরে এমন ভিড় হয়েছিল যে, খড়্গে এবং রেবন্ত নিজেই সেই ভিড় ঠেলে ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না। প্রবল হর্ষধ্বনির মধ্যে শপথ নেওয়া রেবন্তের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, কংগ্রেসের দেওয়া ঢালাও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের জন্য অর্থের সংস্থান করা। সমস্যা হল, প্রতিটি পদক্ষেপের জন্যই তাঁকে দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের মুখাপেক্ষী থাকতে হবে। টিডিপি থেকে কংগ্রেসে আসায় দল ও সরকারে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেতে গিয়ে অনেকের বাঁকা দৃষ্টির মুখেও তিনি পড়তে পারেন বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। আজকের ছবি অবশ্য তাঁকে স্বস্তিই দিল। ডি রাজা পরে জানান, অনেক বিরোধী দলের সাংসদই এসেছিলেন, যাঁরা সময়ে অনু্ষ্ঠানে পৌঁছতে পারেননি।

এই জোট-প্রয়াস নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্যসভায় আজ আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর বক্তৃতার মাঝখানে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের উদ্দেশে ‘হাল্কা টিপ্পনি’ করার অনুমতি চান। তার পর বলেন, “পি চিদম্বরমের একটা চরিত্র-বিরোধী বিষয় আমরা দেখলাম এই আলোচনাতে। যিনি এত পণ্ডিত, ১৯৬৮ সালে হার্ভার্ডে পড়তেন, তখন আমি প্রাথমিক স্কুলে পড়ি। সেই চিদম্বরম এখন ডেরেক ও’ব্রায়েনের যুক্তির উপরে ভর করে নিজের কথা বলছেন! নিজের বক্তৃতায় তিন চার বার তিনি ডেরেকের নাম করলেন! আমার মনে হল, হায় হায়। এটা তা হলে তৃণমূলকে সন্তুষ্ট করার জন্য? যাতে তৃণমূল ডট ডট ডট জোটে আসে! কারণ, ওখানে একটা নরম-গরম রাজনীতি চলছে বলে মনে হচ্ছে। আমার মনে হল, এটা তা হলে পুরোপুরি তৃণমূল এবং কংগ্রেসের বিষয়। ওই ডট ডট ডট জোটের বিষয়।” এর পরে ধনখড়ও বলেন, “আমারও তো একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি এক দিন তিন বার ডেরেকের নাম তুলেছি। তিন বারই জয়রাম রমেশ উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা মন্তব্য করেছেন! জয়রামজি, কিছু পাকছে নাকি তলায় তলায়?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement