—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আগামী পাঁচ তারিখ আর জি করের ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যেতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতার এবং দীর্ঘ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পরে সিবিআই যে রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে ওই দিন পেশ করতে চলেছে, তাতে অনেক ‘প্রভাবশালী’র নাম থাকতে পারে বলে সূত্রের দাবি।
ওই দিন শুনানির সময়ে রিপোর্টের কতটা বাইরে আসবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তা যতটুকুই আসুক, এর পরে যে সার্বিক রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি হবে তা শাসক দলকে কোণঠাসা করতে পারে বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের অনুমান। তাই এখন থেকে ‘ঔদ্ধত্য কমাতে’ বার্তা দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষত ডাক্তার এবং রাজ্যের সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে দলের কোনও নেতা, বিধায়ক, সাংসদ যাতে খারাপ ব্যবহার না করেন, সে জন্য সতর্ক থাকার কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিশানা করে তৃণমূল নেতৃত্ব এই বয়ান তৈরি করতে চাইছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের তদন্তকে লঘু করে আর জি করের আর্থিক দুর্নীতিকেই সামনে নিয়ে আসতে চাইছে, রাজ্য প্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। তাঁদের অভিযোগ, যে নির্যাতনের বিচার রাজ্যবাসী চাইছে, তার দিকে নজরই নেই সিবিআই-এর।
আজ সকালে তৃণমূলের রাজসভার দুই সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সাকেত গোখলে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন। ডেরেক আর জি করের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে অপরাধীর শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি লেখেন, “নির্ভয়া কাণ্ডের এক যুগ পেরিয়ে গেল, নারকীয় জঘন্য অপরাধ শেষ হল না। এই অগস্টে কলকাতার এক তরুণী চিকিৎসককে আমরা হারালাম। রায়গড়ে হারিয়েছি এক আদিবাসী নারীকে। জোধপুরে পনেরো বছর বয়সি, দিল্লিতে ৭ বছর এবং বদলাপুরে দু’জন ৪ বছরের শিশুকন্যাকে। আজ কথাকে কাজে পরিণত করার শপথ নিই আমরা। দ্রুত। এই প্রথম বার রাজ্য সরাসরি ধর্ষণ-বিরোধী আইন পাশ করল। এটা সূচনা। বাংলা রাস্তা দেখাচ্ছে।’ এর পরে রবার্ট ফ্রস্ট-এর বিখ্যাত পঙক্তির বঙ্গানুবাদ উদ্ধৃত করে তিনি লেখেন, ‘‘কিন্তু, কথা আছে, আমায় যেতে হবে/ ঘুমের আগেভাগে, আমায় যেতে হবে/ অনেক পথ বাকি, আমায় যেতে হবে...।’’
পাশাপাশি সাকেতের বক্তব্য, আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। যার সঙ্গে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার সম্পর্ক নেই বলে তাঁর দাবি। তিনি লেখেন, অথচ সিবিআই-কে প্রথমেই ধর্ষণ মামলাটির তদন্ত করতেই বলা হয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগ পরে সংযুক্ত হয়। তৃণমূলসাংসদের কথায়, গত কুড়ি দিন সিবিআইয়ের তদন্ত চলছে এই দুর্নীতি নিয়েই। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ধর্ষণ এবং খুন নিয়ে গত কুড়িদিন তদন্তের কোনও অগ্রগতিই ঘটায়নি সিবিআই।
সাকেতের মতে, কলকাতা পুলিশ এই মামলায় যাকে গ্রেফতার করেছিল এখনও পর্যন্ত সে-ই একমাত্র অভিযুক্ত। এই নিয়ে সিবিআই কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি কাউকে।