ধৃতদের নিয়ে আদালতের পথে পুলিশ। শুক্রবার হাফলংয়ে। ছবি: বিপ্লব দেব।
তোলা আদায় করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ল তিন যুবক। সন্দেহ, তারা মাওবাদী জঙ্গি। ডিমা হাসাও জেলার তিনকিলো বাজার এলাকা থেকে গত কাল বিকেলে পুলিশ তাদের পাকড়াও করে। পরে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একটি একে-৪৭ রাইফেল ও বেশ কিছু কার্তুজ আটক করেছে। ধৃতদের মধ্যে এক আদিবাসী যুবকও রয়েছে। এই তিনজনকে ধরার পর এলাকাবাসীর আশঙ্কা, ডিমা হাসাও জেলায়ও ঘাঁটি গাড়ছে মাওবাদীরা। ডিমাসা যুবকদের সংগঠিত করছে তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েকদিন থেকেই উমরাংশু থানার তিনকিলো বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা দাবি করছিল তিন যুবক। বন্দুক দেখিয়ে পুলিশকে হুমকি দিচ্ছিল। তারা যাতে পুলিশকে এ ব্যাপারে না জানায় তার জন্যও হুমকি দিচ্ছিল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে, গত কাল সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশ ও আসাম রাইফেলস ওই এলাকায় অভিযান চালায়। মোটর সাইকেল নিয়ে তিন জন বাজারে ঢুকতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে শনি ফংলো ও প্রসেন লাংথাসা ডিমা হাসাও জেলারই বাসিন্দা। তবে ধৃত মঙ্গল মুন্ডার বাড়ি ত্রিপুরায়। ঝাড়খণ্ড থেকে কাজ করতে এসে মঙ্গলের পূর্ব পুরুষরা ত্রিপুরাতেই থেকে যায়। মঙ্গল জানিয়েছে, উমরাংশুতে সে আড়াই-তিন বছর ধরে বসবাস করছে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একটি একে ৪৭ রাইফেল উদ্ধার করে। সঙ্গে মেলে ২৩ রাউন্ড কার্তুজও। সঙ্গে থাকা মোটর সাইকেল এবং দু’টি মোবাইল সেটও বাজেয়াপ্ত করা হয়। ধৃত তিন জনকেই আজ হাফলং আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতরা অবশ্য করেছে, কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু একে সিরিজের রাইফেল কোথায় পেল, জঙ্গি করই বা কেন আদায় করছে, সে সব প্রশ্নে এখনও তারা মুখ খোলেনি বলেই জানিয়েছে।
পুলিশের একাংশ প্রথমে তাদের সাধারণ দুষ্কৃতী বলেই মনে করেছিল। কিন্তু বাড়ি থেকে একে ৪৭ রাইফেল উদ্ধারের পর তাদের চোখ কপালে ওঠে। জেরায় স্বীকার না করলেও অনুমান করা হচ্ছে, মঙ্গল মাওবাদী ক্যাডার। ডিমাসা জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনে ধৃতদের আরও জেরা করা হবে। ঘটনার বিশদ তদন্তে নেমেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার জি ভি শিবপ্রসাদ বলেন, ‘‘মাওবাদীদের সঙ্গে মঙ্গলের সম্পর্কের কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এই সম্ভাবনাকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসপির কথায়, ‘‘সেনা গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছিল। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই এজাহার দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা নিশ্চিত, দুই ডিমাসা যুবকের একজন প্রাক্তন ডিএইচডি জঙ্গি। তার নেতৃত্বেই এরা তোলাবাজি করছিল।’’