প্রতীকী ছবি।
সেনার কনভয় ঘিরে ধরে ভাঙচুর চালাচ্ছিল বিক্ষোভকারীরা। এলোপাথাড়ি পাথর ছুড়ছিল। এমনকী সেনা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন তাঁরা। আত্মরক্ষার তাগিদেই নাকি গুলি ছোড়ে সেনা। সেনার গুলিতে তিন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পরই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে কাশ্মীরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রীতিমতো কার্ফু জারি করা হয়েছে উপত্যকায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন সোপিয়ানের গনভপোরা গ্রামের পাশ দিয়ে একটি সেনা কনভয় যাচ্ছিল। ঠিক সে সময় শ’খানেক বিক্ষোভকারীর একটি দল কনভয়ের উপরে পাথর ছুড়তে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে গুলি চালানো শুরু করে সেনা। আর তাতেই তিন জনের মৃত্যু হয়।
গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অন্তত ৯টি থানা এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেনার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার বসির আহমেদ খান জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন সোপিয়ানের ডেপুটি কমিশনার।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে পথ দেখে নেব, এ বার বিজেপিকে হুঙ্কার টিডিপির
এই ঘটনার রেষ যাতে দ্রুত না ছড়ায়, তাই পুলওয়ামা, অনন্তনাগ, কুলগ্রাম এবং শোপিয়ানে মোবাইল ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে সেনা। এগুলো ছাড়া উপত্যকার বাকি এলাকায় ইন্টারনেট স্পিড খুব কমিয়ে আনা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবাও। বারামুলা এবং বানিহালের মধ্যে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কাশ্মীরের প্রায় সমস্ত অফিস, দোকান বন্ধ।
যদিও বাহিনীর দাবি, আত্মরক্ষার জন্যই গুলি চালায় সেনা। তাদের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তাদের লক্ষ্য করে হঠাৎই পাথর ছোড়া শুরু করে শ’খানেক বিক্ষোভকারী। মুহূর্তের মধ্যে সেই সংখ্যাটা দু’শো-আড়াইশোয় ঠেকে। এক জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও)-কে টেনে-হিঁচড়ে মারধরেরও চেষ্টা করা হয়। সেনার গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ারও চেষ্টা চালানো হয়। উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে গুলি চালাতে বাধ্য হয় সেনা। আর তাতেই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিনের ঘটনায় সাত জওয়ানও জখম হয়েছেন বলে সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে। ১১টি গাড়িতেও কমবেশি ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত দু’দিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। ওই জেলারই চায়গুন্দ এলাকায় সেনার গুলিতে এক স্থানীয় যুবকের মৃত্যু হয়। জখম হয় চার কিশোরীও। সেই থেকেই তপ্ত ছিল এলাকা। সেনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ছোট-বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আগেও।