‘ভিভিআইপি’ গাছকে পাহারা দিচ্ছেন দুই রক্ষী। ছবি: টুইটার।
মোটেই সে সাধারণ গাছ নয়। রীতিমতো ‘ভিভিআইপি’। যে গাছের নীচে মহাবোধির সন্ধান পেয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধ, এটি তারই বংশদ্ভূত। তাই এই অশ্বত্থ গাছটিই এখন চোখের মণি মধ্যপ্রদেশ সরকারের। ‘ভিভিআইপি’ এই গাছের রক্ষণাবেক্ষণের পিছনেই বছরে খরচ করা হচ্ছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন- তিব্বতে মহড়া চিনা সেনার
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল এবং বিদিশা শহরের মাঝখানে সাঁচি বৌদ্ধ আবাসন থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে সালমতপুরে সযত্নে লালিত হচ্ছে এই গাছ। গোটা এলাকাটাকেই ওয়ার্লড হেরিটেজের তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। গাছটির রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার জন্য চার জন রক্ষীও নিযুক্ত করা হয়েছে। ঘড়ি ধরে গাছের সেবা যত্ন করার দায়িত্ব তাঁদের উপর। তাঁদেরই এক জন পরমেশ্বর তিওয়ারি জানিয়েছেন, তাঁকে ২০১২-র সেপ্টেম্বরে এখানে নিযোগ করা হয়। সেই থেকেই তিনি এখানে আছেন। তাঁর দাবি, আগে বহু মানুষ এখানে আসতেন। এখন সেই সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। তিনি জানান, আজ থেকে পাঁচ বছর আগে, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে দেশ থেকে এই ‘পবিত্র’ গাছটি নিয়ে আসেন। তখন গাছটি চারা অবস্থায় ছিল। সেই থেকে রাজ্য সরকার পরম যত্নে গাছটিকে লালন করে চলেছে।
ভিভিআইপি গাছের দেখভালের জন্যও রয়েছে ‘ভিভিআইপি’ ব্যবস্থা। গাছে নিয়মিত জল দেওয়ার জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ আলাদা একটি জলের ট্যাঙ্ক। গাছের শরীর স্বাস্থ্যের উপরেও রয়েছে সরকারের কড়া নজর। সেই জন্য রাজ্যের কৃষি দফতর এক জন উদ্ভিদবিজ্ঞানীকেও নিয়োগ করেছে। প্রতি সপ্তাহে এসে গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার দায়িত্ব তাঁর। রাজ্যের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট বরুণ আওয়ান্তি জানিয়েছেন, গাছের নিরাপত্তা, জল দেওয়া ইত্যাদি কাজের জন্য চার জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। গাছের যাবতীয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে। গোটা এলাকাটাই বৌদ্ধ সার্কিট হিসেবে চিহ্নিত।
সাঁচির মহাবোধি সোসাইটির অন্যতম আধিকারিক ভান্তে চান্দারতন কথায় গাছটির বিশেষত্ব রয়েছে। তাঁর মতে, যে বোধিবৃক্ষের তলায় বসে বুদ্ধদেবের জ্ঞানোদয় হয়, সেই আসল বোধিবৃক্ষ খ্রিস্ট্রপূর্ব তৃতীয় শতকে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কাতে নিয়ে গিয়ে অনুরাধাপুরাতে রোপণ করা হয়েছিল। সেই বোধিবৃক্ষেরই একটি চারা ২০১২ সালে মধ্যপ্রদেশে নিয়ে আসেন রাজাপক্ষে।