গ্রাম শব্দটা শুনলে চোখের সামনে কী ভেসে ওঠে? নির্মল, সবুজে ঘেরা একটা অঞ্চল। কিন্তু বাস্তবটা এখন অনেকটাই উল্টে গিয়েছে। বহু গ্রামেই এখন আবর্জনার স্তূপ। ঠিক যেমন কয়েক মাস আগে ছিল গুজরাতের গাঁধীনগরের কাছে অম্বাপুর।
৫০০ পরিবারের ঠিকানার এই গ্রামে আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনও জায়গা ছিল না। প্রত্যেকেই বাড়ির আশেপাশে আবর্জনা ফেলতেন। গ্রামের একটা পুকুর প্রায় বুজে গিয়েছিল প্লাস্টিক ও অন্যান্য আবর্জনায়।
এমনই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, ঘনঘন অসুস্থ হয়ে পড়ছিল বাচ্চারা। বড়দের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই ছিল। মাত্র ৮ মাসে চিত্রটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। গ্রাম এখন সম্পূর্ণ আবর্জনা মুক্ত। কী ভাবে?
গ্রামবাসীদের ইচ্ছা এবং একদল কলেজ পড়ুয়াদের চেষ্টায়। গাঁধীনগরের এলডিআরপি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং রিসার্চ-এর কয়েকজন পড়ুয়া সম্প্রতি এই গ্রামে আসেন। গ্রামের করুণ পরিস্থিতি তাঁদের নজরে আসে।
রোজকার অভ্যাস পাল্টাতে গ্রামবাসীরা কতটা রাজি হবেন, সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন না। কিন্তু তাঁদের সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে আবর্জনা মুক্ত গ্রাম বানানোর প্রস্তাবে একবাক্যেই রাজি হয়ে যান গ্রামবাসীরা।
প্রথমে মুম্বইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গ্রামের সমস্ত জমা আবর্জনা দূর করেন তাঁরা। তারপর প্রতিটা ঘরে দুটো করে প্লাস্টিকের ডাস্টবিন দেওয়া হয়। একটায় প্লস্টিক জাতীয় বর্জ্য। অন্যটায় বায়োডিগ্রেডাবল বর্জ্য রাখতে বলা হয় গ্রামবাসীদের।
গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে একজন সাফাই কর্মী নিয়োগ করেন তাঁরা। যিনি রোজ সকালে প্রতিটা বাড়ি থেকে সেই বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। শুধু সংগ্রহ করাই নয়, বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রশিক্ষণও তাঁকে দেওয়া হয়।
আবর্জনা থেকে তৈরি সার চাষিরা ফসল ফলানোয় ব্যবহার করেন। এতে ওই ব্যক্তির কর্মসংস্থানও হয়েছে। এই ভাবে গত ৮ মাস ধরে ক্রমে আবর্জনা মুক্ত গ্রাম হয়ে উঠেছে অম্বাপুর।