এ বার থেকে ফোন চার্জ দিলেই ফিট হয়ে যাবেন আপনি। অবাক লাগছে? ফোন চার্জ দিতে গিয়ে কী ভাবে ফিটনেস ধরে রাখা যায়, তার একটা উপায় বাতলেছেন আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে এই দুই কিশোর।
দিল্লির বাসিন্দা মোহাক ভাল্লা এবং আনন্দ গঙ্গাধারণ। দু’জনেরই বয়স ২০ বছর। শৈশবের এই দুই বন্ধু দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই এমন কিছু একটা তৈরি করার মনস্থির করেন।
পদার্থবিদ্যারই একটি থিয়োরি কাজে লাগিয়ে তাঁরা এমন একটি অভিনব ফোন চার্জার বানিয়ে ফেলেন।
তাঁদের আবিষ্কারের নাম ওয়াকি মোবি চার্জার। এটা এমন একটা যন্ত্র যা আপনার হাঁটার সময় তৈরি গতিশক্তিকে বিদ্যুত্ শক্তিতে রূপান্তরিত করে দেবে। যা দিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ হবে।
যন্ত্রটি জুতোয় লাগানো থাকবে। আর তার সঙ্গে বিদ্যুতের তার দিয়ে চার্জার জোড়া থাকবে মোবাইলে। তাঁদের দাবি, সাধারণ বৈদ্যুতিক চার্জারে যে গতিতে মোবাইল চার্জ হয়, তার ২০ শতাংশ দ্রুততার সঙ্গে এই যন্ত্রে চার্জ হবে।
তবে এখনই ইচ্ছা করলেই এই যন্ত্র কিনতে পারবেন না। কারণ যন্ত্রের প্রাথমিক নীতি এটা হলেও, এখনও বাজারের উপযোগী হয়ে ওঠেনি সেটা।
মোহক এখন দিল্লির ভারতী বিদ্যাপীঠ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছেন আর আনন্দ চেন্নাইয়ের ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে।
দু’জনেই পড়াশোনার ফাঁকে এখনও তাঁদের এই আবিষ্কারের উপর কাজ করে চলেছেন। যন্ত্রটিকে আরও আপগ্রেড করে তা ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। আর এক-দু’বছরের মধ্যে তা বাজারে আসবে বলেই আশা তাঁদের।
কী ভাবে মাথায় এমন পরিকল্পনা এল তাঁদের? দু’জনেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বিদেশে এ রকম একটা প্রোজেক্টের কথা শুনে। সেখানে নাকি রেলের সমস্ত প্ল্যাটফর্ম আলোকিত হয় যাত্রীদের চলাফেরা থেকে উৎপন্ন শক্তি দিয়েই।
মোবাইল ফোনকেই কেন বেছে নিলেন? তাঁরা জানান, তাঁরা এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন, যার চাহিদা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি। আর ছোট থেকে বড় সকলেই এখন মোবাইলে মগ্ন থাকেন দিনের বেশির ভাগ সময়।
স্কুলের শিক্ষক এবং পরিবার— উভয় দিক থেকেই সাহায্য এবং সমর্থন পান দু’জনেই। এ রকম একটা যন্ত্র তৈরি করতে প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসপত্র কেনার টাকা দিয়েছিল পরিবার। তিন মাস লেগেছিল এই প্রোজেক্টটা শেষ করতে।
কী ভাবে কাজ করে যন্ত্রটি? দুটো পায়েই জুতোর সঙ্গে এই যন্ত্র লাগানো থাকবে। হাঁটাচলার সঙ্গে যে শক্তি তৈরি হবে তা ব্যাটারিতে জমে থাকবে আর সেই ব্যাটারির মাধ্যমেই চার্জ হবে ফোন।
প্রথম যখন এই মডেলটি বানিয়েছিলেন তাঁরা, খরচ হয়েছিল দু’হাজার টাকা। কিন্তু অনেকটা পরিমাণ একসঙ্গে তৈরি করা গেলে, খরচ পাঁচশো টাকায় নেমে আসবে। যাতে প্রত্যেকের সাধ্যের মধ্যেই এই জুতো থাকে, তারই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।