—ফাইল চিত্র।
এ বারের বাজেট এক সম্পূর্ণ নতুন সূচনা। তাই সংসদের অধিবেশন সুষ্ঠু ভাবে চলতে দিন। বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই সবক’টি বিরোধী দলের কাছে এই অনুরোধ জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে সরকার পক্ষ। সর্বদল বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী নির্বিঘ্নে সংসদ চলতে দেওয়ার আবেদন রেখেছিলেন। কিন্তু নোট বাতিলের পর থেকে রণমূর্তিতে থাকা বিরোধী পক্ষ যে ভাবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন পুরোপুরি ভেস্তে দিয়েছিল, তাতে বাজেট অধিবেশন কতটা শান্তিপূর্ণ থাকবে, তা নিয়ে সরকার নিশ্চিত নয়। তাই মঙ্গলবার সংসদে ঢুকেই ফের সুষ্ঠু ভাবে অধিবেশন চলতে দেওয়ার আবেদন জানাতে হল প্রধানমন্ত্রীকে।
সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কাজের দিনেই বাজেট পেশ হয় সংসদে। সেই নিয়ম অনুযায়ী এ বার ২৮ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলবে বলে বাজেট পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিল বিরোধী পক্ষ। সরকার সে দাবি মানেনি। বাজেট আরও এগিয়ে এনেছে। ভোটের মুখে ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করছে। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সংসদে জানিয়েছেন, বাজেটে যা কিছু ঘোষণা হবে, তা যাতে পরবর্তী অর্থবর্ষের প্রথম দিন থেকে অর্থাৎ ১ এপ্রিল থেকেই কার্যকর করা যায়, তার জন্যই বাজেট এগিয়ে আনা হয়েছে। মোদী বলেন, ‘‘এই প্রথম বার বাজেট পেশের তারিখ এক মাস এগিয়ে আনা হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘একটা নতুন সূচনা ঘটতে চলেছে।’’ নতুন সূচনা বলতে অবশ্য শুধুমাত্র বাজেট পেশের তারিখটা এগিয়ে আনার কথা তিনি বলছেন না। এ বারই প্রথম দেশের রেল বাজেট মিশে গিয়েছে সাধারণ বাজেটে। এক সঙ্গে পেশ হতে চলেছে দুই বাজেট। প্রধানমন্ত্রী তাকেও নতুন সূচনা বলেই মনে করছেন।
আরও পড়ুন: জেটলির বক্তৃতা বয়কট করছে তৃণমূল, মানা ‘মোদীবাবু’ বলাও
অন্যান্য বিরোধী দল বাজেট অধিবেশনে কী ভূমিকা নিতে চলেছে, তা বুধবার থেকেই বোঝা যাবে। কিন্তু তৃণমূল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, বাজেট পেশের সময় তারা সংসদে উপস্থিত থাকছে না। দুই সাংসদের গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানানো এই অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ। তা ছাড়াও, সরস্বতী পুজোর দিন বাজেট পেশ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল বলেও তৃণমূলের দাবি। কিন্তু কেন্দ্র সে দাবি মানেনি। এটিও তৃণমূলের বাজেট বয়কটের অন্যতম কারণ।
তৃণমূল না থাকলেও প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দল বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত থাকছে। তাদের ভূমিকা কী হতে চলেছে, সে বিষয়ে সরকার পক্ষ চিন্তিত। প্রধানমন্ত্রী এ দিন সে প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘জনগণের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে গত কয়েক দিন ধরে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়েছি।’’ এই মন্তব্যের মাধ্যমে বিরোধীদের কিয়ৎ চাপে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিরোধীরা এর পরও হট্টগোল করলে তা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে, এমন বার্তাই আসলে দিতে চেয়েছেন মোদী, মত বিশ্লেষকদের।