কার্ল মার্ক্সের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ থেকে পটনায় শুরু হয়েছে তাঁর জীবন, চিন্তা এবং প্রভাব নিয়ে চার দিনের এক আলোচনা চক্র। আয়োজক বিহারের অন্যতম গবেষণা সংস্থা, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এডিআরআই)। এবং চিন্তা ভাবনা করেই রাজনীতির মানুষদের এই আলোচনা চক্র থেকে দূরেই রাখা হয়েছে। আসলে সমাজ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মার্ক্সের ভূমিকা নিয়ে এই আলোচনাকে ঘিরে একত্রিত হয়েছেন ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা।
কেন এই আয়োজন? এডিআরআইয়ের সদস্য-সচিব শৈবাল গুপ্ত বলেন, ‘‘আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে মার্ক্স ও কমিউনিজম বিশ্ব থেকে প্রায় অপসারিত। কিন্তু তা যে নয়, সমাজ ও অর্থ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মার্ক্সের চিন্তা গবেষকদের সব সময় সাহায্য করে চলেছে।’’ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক দীপঙ্কর গুপ্তর কথায়, ‘‘দাদু এবং কাকার মতো পুলিশ অফিসার হব ভেবেছিলাম। কিন্তু ১৯ বছর বয়সে হাতে আসে কার্ল মার্ক্স। গোটা জীবনটাই তারপরে বদলে গিয়েছে।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দীপক নায়ারের মতে, ‘‘স্ট্যালিন-সহ ক্ষমতায় থাকা একনায়কদের জন্য মার্ক্সবাদের ক্ষতি হয়েছে।’’ শিক্ষাবিদ মেঘনাদ দেশাইয়ের মতে, ‘‘মার্ক্সের জন্যই মালিক এবং শ্রমিক এক টেবিলে বসতে পারছেন।’’ আলোচনা চক্রে হাজির শিক্ষাবিদদের অনেকেই মনে করেন, ‘‘আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে মার্ক্স-বিরোধী রাজনৈতিক তত্ত্ব ও মতাদর্শের অধ্যয়নও কার্ল মার্ক্সকে বাদ দিয়ে করা সম্ভব নয়।’’
মাত্র কয়েক দশক আগেও বিশ্বের এক তৃতীয়াংশে শাসন ক্ষমতা ছিল মার্ক্সবাদীদের হাতেই। এ দেশের তিনটি রাজ্যেও মার্ক্সবাদীরা ক্ষমতায় ছিলেন। এমনকী বিহারের মতো রাজ্যেও এক সময়ে মার্ক্সবাদীদের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। এখনও বিহার বিধানসভার তিনটি আসনে এবং রাজ্যে প্রায় তিন শতাংশ ভোটে মার্ক্সবাদীদের দখলদারি রয়েছে। যদিও এই আলোচনা চক্রে হাজির শিক্ষাবিদদের মতে, মার্ক্স শুধুই ক্ষমতায় টিকে থাকার হাতিয়ার নয়।