উপনির্বাচনে জয়ের পর কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে কংগ্রেসকে। বিজেপি বলছে, হাস্যকর কথাবার্তা বলছে কংগ্রেস। —ফাইল চিত্র।
বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (ইভিএম) নিয়ে ফের অস্বস্তিতে কংগ্রেস। বেফাঁস মন্তব্য আর এক সিনিয়র কংগ্রেস নেতার। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বৃহস্পতিবার দাবি করলেন, তাঁর রাজ্যের উপনির্বাচনে যে সব ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছে, সেই ইভিএমগুলিতে কোনও গোলমাল ছিল না। সেই কারণেই কংগ্রেস উপনির্বাচনে জিততে পেরেছে বলে সিদ্দারামাইয়ার দাবি।
সদ্য যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের ফলাফল মোটেই আশাব্যাঞ্জক নয়। শুধুমাত্র পঞ্জাব ছাড়া কোথাও ক্ষমতায় আসতে পারেনি কংগ্রেস। তার পর থেকেই কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলি ইভিএমের বিরুদ্ধে সরব। বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী সর্বাগ্রে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন। উত্তরপ্রদেশে ইভিএমে গড়বড় করেই বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার পর থেকে কংগ্রেস এবং অন্য অনেকগুলি বিরোধী দল ইভিএম বাতিল করে ব্যালটে ভোট গ্রহণের দাবি তুলতে শুরু করেছে। এই দাবি নিয়ে বিরোধী দলগুলি রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থও হয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু তার মধ্যেই উপনির্বাচন হল বেশ কয়েকটি রাজ্যে। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে যে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হল, সেই দু’টিতেই কংগ্রেস জয়ী হল। ইভিএম-এ কারচুপিই যদি হয়, তা হলে কর্নাটকে কংগ্রেস জয়ী হল কী করে? বিজেপি সেখানেও জিতল না কেন? স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে।
বুধবারই ইভিএম বাতিলের দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবারে হাজির হয়েছিল কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দল। ছবি: পিটিআই।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘এই দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে ইভিএমে কারচুপি হয়নি।’’ কারচুপি হয়নি বলেই কংগ্রেস জিতেছে, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। সিদ্দারামাইয়ার এই মন্তব্যই এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ভোটে হারের পর ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তোলা কংগ্রেসের পক্ষে খুব একটা সম্মানজনক হয়নি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। রাহুল গাঁধী ইভিএম বাতিলের দাবি তুলেছেন। কিন্তু প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলি বলেছেন, হারের দায় ইভিএমের উপর চাপানো উচিত নয়। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অমরেন্দ্র সিংহও প্রশ্ন তুলেছেন— ইভিএমে যদি কারচুপি হয়ে থাকে, তা হলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেন কী করে? দলের মধ্যেই এই চাপান-উতোর নিয়ে কংগ্রেস এমনিতেই অস্বস্তিতে ছিল। বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের ফল বেরনোর পর কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করলেন, তাতে আরও হাস্যকর পর্যায়ে পৌঁছে গেল বিতর্ক। বলছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: গড় বাঁচল, ভোট বাড়ল, চিন্তাও বাড়ল তৃণমূলের