Lok Sabha Election

Lok Sabha Election 2024: লোকসভা নির্বাচনে মোদীকে রুখতে বিরোধী মহাজোটের প্রয়োজন নেই, মত তৃণমূলের

তৃণমূলের বক্তব্য, বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপি-র সঙ্গত্যাগের পর তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে মাত্র তিনটি রাজ্যে মহাজোট গুরুত্বপূর্ণ হবে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২২ ০৭:০৪
Share:

গোটা দেশ ভিত্তিক মহাজোটের প্রয়োজন নেই বলে মনে করে তৃণমূল। ফাইল চিত্র।

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীকে রুখতে গোটা দেশ ভিত্তিক মহাজোটের প্রয়োজন নেই। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব আজ এমনটাই জানিয়েছেন।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বক্তব্য, বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপি-র সঙ্গত্যাগের পর তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে মাত্র তিনটি রাজ্যে (বিহার, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্রে) মহাজোট গুরুত্বপূর্ণ হবে। এ ছাড়া অসমেও সেই সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া দেশের অন্যত্র বিজেপি-র মোকাবিলায় মহাজোটের প্রয়োজন নেই। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ৪২টি আসনের সব ক’টিতে লড়বে তাঁর দল। তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, দলনেত্রীর বার্তা স্পষ্ট। বেশিরভাগ রাজ্যে প্রধান শক্তিশালী দলই যাতে বিজেপি-র মুখোমুখি হয়, তা নিয়ে ঘরোয়া ভাবে বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে তৃণমূল। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধী কৌশল নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ বলেন, “বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্র বাদে বাকি কোনও রাজ্যে তথাকথিত মহাজোটের কোনও প্রযোজন হচ্ছে না। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে যেখানে পারবে বিজেপি-কে হারানোর জন্য লড়াই করবে, পরে সকলে একসঙ্গে চলে আসবে।” এই তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হচ্ছে, পঞ্জাব ও দিল্লিতে আপ, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে, তেলঙ্গানায় টিআরএস, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, উত্তরপ্রদেশে এসপি-র মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলি লড়বে বিজেপি-র বিরুদ্ধে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের দাবি, আগামী সাধারণ নির্বাচনে মোদী বনাম রাহুল গান্ধী মডেল অনুসরণ করা হবে না। কারণ, তা ইতিমধ্যেই ‘ব্যর্থ হয়ে যাওয়া’ মডেল। বরং মোদীকে লড়তে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের শক্তিশালী নেতার বিরুদ্ধে। তৃণমূলের যুক্তি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান বা গুজরাতের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের লড়াইয়ে কোনও ‘ভোট-কাটুয়া’ যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করা জরুরি।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এই তত্ত্বের কয়েকটি দিক রয়েছে। আগে মহাজোট হলে নেতৃত্বের প্রশ্নটিও কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ধারাবাহিক অভিযানে এবং তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হওয়ার পর, মমতা এখনই নিজেকে বিরোধী জোটের নেত্রী হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন না। বরং তাঁর বার্তা, সকলে নিজ নিজ রাজ্যে লড়াই করুন, তিনি সেতুবন্ধনের কাজে তৈরি। অন্য দিকে, কংগ্রেসের বক্তব্য, আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষে যে যার রাজ্যে লড়াই করার নীতি নিয়ে চলা স্বাভবিক ও সহজ। কিন্তু কংগ্রেসের মতো জাতীয় দল, দেশের সর্বত্র যেখানে সংগঠন, কর্মী ও প্রার্থী রয়েছে, সেখানে তারা নিজেরা লড়াই থেকে সরে আসবে কেন। বরং বিভিন্ন রাজ্যে (অন্তত যেখানে কংগ্রেসের জোরালো উপস্থিতি রয়েছে) আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসকে বিরোধী কৌশলের অংশীদার করলে ফল ভাল হবে বলেই দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বের।

তৃণমূল নেতৃত্বের হিসাব অনুযায়ী, বিজেপি যদি ২০২৪-এর ভোটে আড়াইশো আসনের কাছাকাছি আটকে যায়, তা হলে বিজেডি এবং জগন রেড্ডির দলের গুরুত্ব উভয় পক্ষের কাছেই বেড়ে যাবে। তারা এতদিন বিজেপি-র ‘বি’ দল হিসাবে থেকে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিজেপি দুর্বল হলে, এই দুই দল বিরোধী শিবিরে আসতেও পারে। বিরোধীদের আশা, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটকের মতো রাজ্যে এনডিএ গত বারের তুলনায় অনেক কম আসন পাবে।

ইতিমধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সরব হয়েছেন, নীতীশ কুমারকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার দাবিতে। তাঁর কথায়, “সমস্ত বিরোধী দলের হয়ে কথা বলতে পারি না। তবে এটুকু বলতে পারি, যদি ভাবনাচিন্তা করা হয়, তা হলে সম্মানীয় নীতীশজি অবশ্য শক্তিশালী প্রার্থী। তাঁর ৩৭ বছরের দীর্ঘ সংসদীয় এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও সম্পর্ক ভাল।” তেজস্বীর কথায়, “বিহারে জেডি(ইউ), আরজেডি এবং কংগ্রেসের একসঙ্গে আসার একটাই বার্তা। বিরোধী দল নির্বিশেষে স্বীকার করছে, দেশের সামনে সবচেয়ে বড় বিপদ বিজেপি-র একাধিপত্য।”

আজ তেলঙ্গানায় জনসভা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি-র এই দু’নম্বর নেতার সমাবেশের আগেই তোপ দেগেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা টিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও। তিনি বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে রাজ্য সরকারগুলি উল্টে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।’’ জানিয়েছেন, তিনি ইডি-র ভয়ে কম্পিত নন। চন্দ্রশেখরের অভিযোগ, নকল মামলা সাজানো হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ু সরকারকে ভাঙার চেষ্টা করছেন মোদী-শাহেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement