National Gallery

হাতে লিখেই ৯১ বছর পার করল উর্দু দৈনিক ‘দ্য মুসলমান’

টরে টক্কার শব্দ এখন অতীত, পোস্টকার্ড বিলুপ্তপ্রায়, কিন্তু এখনও রমরমিয়ে চলছে হাতে লেখা খবরের কাগজ। নয় নয় করেও ৯১ বছর পার করে ফেলল বিশ্বের একমাত্র হাতে লেখা উর্দু দৈনিক ‘দ্য মুসলমান’। যাত্রা শুরুর দিন থেকে এখনও পর্যন্ত এই খবরের কাগজের খুঁটিনাটি জানতে চোখ রাখুন গ্যালারির পাতায়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ১১:১৩
Share:
০১ ০৯

টরে টক্কার শব্দ এখন অতীত, পোস্টকার্ড বিলুপ্তপ্রায়, কিন্তু এখনও রমরমিয়ে চলছে হাতে লেখা খবরের কাগজ। নয় নয় করেও ৯১ বছর পার করে ফেলল বিশ্বের একমাত্র হাতে লেখা উর্দু দৈনিক ‘দ্য মুসলমান’। যাত্রা শুরুর দিন থেকে এখনও পর্যন্ত এই খবরের কাগজের খুঁটিনাটি জানতে চোখ রাখুন গ্যালারির পাতায়।

০২ ০৯

কম্পিউটার বা কোনও রকম মুদ্রণযন্ত্র নয়। কেবলমাত্র হাতে লিখেই ১৯২৭ সালে যাত্রা শুরু হয় এই দৈনিকের। সৈয়দ আজমতউল্লাহের হাত ধরে চেন্নাই শহর থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় ‘দ্য মুসলমান’। সাবলীল উর্দু ভাষায় খবরের পিঠে খবর সাজিয়ে ৯১ বছর ধরে সমান জনপ্রিয় এই সংবাদপত্র।

Advertisement
০৩ ০৯

খবরের কাগজটির বর্তমান সম্পাদক সৈয়দ আরিফুল্লাহ জানিয়েছেন, তিন প্রজন্ম ধরে চলছে এই উর্দু দৈনিক। সূচনাটা করেছিলেন তাঁর দাদু সৈয়দ আজমতউল্লাহ। তাঁর মৃত্যুর পর ২০০৮ সালে ওই কাগজটির হাল ধরেন তাঁর বাবা সৈয়দ ফাজাউল্লাহ। বাবার পরে তাঁর কাঁধেই রয়েছে গোটা দায়িত্ব। তবে, সময় বদলালেও দৈনিকের ঐতিহ্য ও ধরনে কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি।

০৪ ০৯

‘দ্য মুসলমান’-এর মূল আকর্ষণ এর অসাধারণ ক্যালিগ্রাফি। খবর সাজানোর পাশাপাশি রঙ, তুলির বৈচিত্র্যে নানা ক্যালিগ্রাফি ফুটিয়ে তোলার কাজ করেন তিন ‘কাতিব’। রং আর বিভিন্ন কলম ও তুলি দিয়ে লেখা হয় শিরোনাম ও ছবির ক্যাপশন। তবে এখানে কোনও খবরেরই বাইলাইন নেই।

০৫ ০৯

চেন্নাইয়ের ট্রিপলিকেন হাই রোডে দু’কামরার ছোট্ট দু’টি ঘরে প্রথম কাজ শুরু হয় এই দৈনিকের। চার পাতার কাগজটির সব খবর সাজিয়ে দেন আরিফুল্লাহ। এর পর রঙ, তুলি দিয়ে ক্যালিগ্রাফির কাজ শুরু করেন মুখ্য ‘কাতিব’ রহমান হোসেইনি। তাঁর মাসিক বেতন ২,৫০০ টাকা। খবর লেখার দায়িত্বে রয়েছেন শাবানা ও খুরশিদ বেগম। প্রতিটি পাতা সাজানোর জন্য দিনে ৬০ টাকা করে বেতন পান তাঁরা।

০৬ ০৯

দৈনিকের কাজ শুরু হয় সকাল ১০টা থেকে। দু’জন অনুবাদক খবরগুলি উর্দু ভাষায় লিখে দেন। ঘণ্টা দু’য়েক ধরে অনুবাদের কাজ চলে। তারপর ক্যালিগ্রাফি ও লেখার কাজ শুরু করেন তিন ‘কাতিব’। মূল কপি তৈরি হয়ে গেলে দুপুর ১টা নাগাদ প্রিন্টের মাধ্যমে বাকি কপিগুলি তৈরি হয়। সন্ধের মধ্যে খবরের কাগজ পৌঁছে যায় প্রায় ২১ হাজার পাঠকের হাতে। প্রতিটি কাগজের দাম মাত্র ৭৫ পয়সা।

০৭ ০৯

চার পাতার কাগজের প্রথম পাতায় থাকে দেশ ও বিদেশের নানা খবর। দ্বিতীয় পাতা জুড়ে শুধু সম্পাদকীয়। পরের পাতা দু’টিতে স্থানীয় খবর ও বিজ্ঞাপন। সম্পাদক আরিফুল্লা জানিয়েছেন, ব্রেকিং নিউজ সাধারণত এই দৈনিকে থাকে না। কারণ সবিস্তার খবর ফের লিখতে গেলে অনেক সময়, পরিশ্রম ও লোকবলের প্রয়োজন। মূলত সমাজের নানা বিষয়ের উপরই জোর দেওয়া হয় এই দৈনিকে। ইসলাম ভিত্তিক খবর প্রথম পছন্দ হলেও সবরকম পাঠকের জন্যই খবর বাছা হয় এখানে।

০৮ ০৯

চিফ রিপোর্টার চিন্নাস্বামী বালাসুব্রামোনিয়ামের কথায়, সোমবারের ‘দ্য মুসলমান’ একটু ভিন্ন ধরণের হয়। ওই দিন কোরান এবং ইসলাম ইতিহাস নিয়ে নানা খবরই প্রাধান্য পায়। দিল্লি, কলকাতা ও হায়দরাবাদের নানা জায়গায় এই দৈনিকের গ্রাহক ছড়িয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

০৯ ০৯

দু’টি দেওয়াল পাখা, তিনটি বাল্ব ও একটি টিউব লাইট দিয়ে সাজানো ছোট্ট দু’টি ঘর থেকে গুটিকয়েক মানুষের নিরলস পরিশ্রমেই দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে এই দৈনিকের। আরিফুল্লার কথায়, ‘‘দ্য মুসলমান কথনওই থেমে থাকবে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই কাগজের ঐতিহ্য একই রকম থাকবে। দেশের সবস্তরের পাঠকের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়াই এই দৈনিকের একমাত্র উদ্দেশ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement