তুরস্কে উদ্ধারকাজে ভারতের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত।
বিধ্বংসী ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া তুরস্কে উদ্ধারের কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। শুরু হয়েছিল ‘অপারেশন দোস্ত’। ভারতের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা যে ভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ চালিয়েছে তা মন জয় করে নিয়েছে তুর্কিদের। ভারতের উদ্ধারকারী দলকে অকুণ্ঠ আশীর্বাদ করে ও ভালবাসা জানিয়ে বহু তুরস্কবাসী জানিয়েছেন, ভারতের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সময় মতো না পৌঁছলে কী হত তাঁরা ভাবতেও পারেন না!
গাজ়িয়ানটেপের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘তখন আমি একেবারে একা। ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে রীতিমতো দিশাহারা। সেই সময় এখানে এসেছিল ভারতের উদ্ধারকারী দল। শুরু করেছিল ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ। ওই সাহায্যের কথা কোনও দিনও ভুলব না। এই ভাবে পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’’ এই গাজ়িয়নটেপের নুরগাদি শহরের ধ্বংস্তূপ থেকেই আট বছরের এক বালিকাকে উদ্ধার করেছিলেন ভারতের উদ্ধারকারীরা।
তুরস্কের বহু বাসিন্দা দ্বর্থ্যহীন ভাষায় জানিয়েছেন, বিপদের দিনে ভারত যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সেই ঋণ হয়তো কোনও দিনই পরিশোধ করা যাবে না। এক তুরস্কবাসীর কথায়, ‘‘ভারতের সাহায্যের কথা কোনও দিন ভুলব না। বিপদের সময় প্রকৃত বন্ধুকেই চেনা যায়। আল্লা ভারতের মঙ্গল করুন।’’
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় উদ্ধারকাজে ১৫২ জনের একটি দল পাঠিয়েছিল ভারত। শুধু উদ্ধারের কাজ নয়, ত্রাণের কাজেও বিপুল সাহায্য পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ত্রাণের সরঞ্জাম, জীবনদায়ী ওষুধ-সহ ৭ কোটি টাকার বেশি ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল উদ্ধারের কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ল্যাব্রাডর প্রজাতির চারটি কুকুর— রোমিও, জুলি হানি ও র্যা ম্বোকে। যে ছ’বছরের এক বালিকাকে ভারতের উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে জীবিত উদ্ধার করেছিলেন, তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব রোমিও ও জুলির। তারই প্রথম সন্ধান দিয়েছেন ওই বালিকার।